সাংসারিক অশান্তি আর। তার জেরেই স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী। সোনারপুর–২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভবানীপুরে জোড়া দেহ উদ্ধারের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। মৃত স্বামীর নাম শশধর হালদার এবং তার স্ত্রীর নাম পায়েল হালদার। তাঁদের আড়াই বছরের সন্তানের কান্নাকাটির আওয়াজ শুনে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারেন প্রতিবেশীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
আরও পড়ুন: পরকীয়া সম্পর্কে অন্তঃসত্ত্বা, যুবতী-যমজ শিশুদের খুন, ১৮ বছর পর ধৃত ২ Ex সেনা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবেশীরা শনিবার ভোরের দিকে দীর্ঘক্ষণ দেখে ধরে শিশুটির একটানা কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। সেই আওয়াজ শুনে তারা শশধরের বাড়িতে যান। তবে দরজা বন্ধ ছিল। অনেক ডাকাডাকি করে শশধর বা তাঁর স্ত্রীর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরে তারা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির মা ও বাবার মৃতদেহ উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, বিছানার উপর থেকে পায়েলের গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়। আর ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে দেহ উদ্ধার হয় শশধরের।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, স্ত্রীকে খুন করার পর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন শশধর। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সাংসারিক অশান্তি ছিল। স্ত্রীর ওপর অত্যাচারের অভিযোগে এর আগে শশধরকে এক মাসের জন্য জেল খাটতে হয়েছিল। তবে ফের দুজনে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু, তারপরেও তাঁদের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। জানা গিয়েছে, শশধর লোকাল ট্রেনে হকারি করতেন। তিনি একজন ফলবিক্রেতা ছিলেন। এর আগে তাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাট থানা এলাকায় থাকতেন। পরে তারা সোনারপুরের ভবানীপুরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ৮ মাস ধরে সেখানেই থাকছিলেন তাঁরা।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত। তবে তাতে তাঁরা খুব বেশি নাক গলাতেন না। জানা গিয়েছে, শিশুর কান্নার আওয়াজ পাওয়ার পর বাড়িওয়ালা তাদের ঘরের সামনে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু, কারও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরে শিশুটি নিজেই দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসে। তখন তাকে তার মা-বাবার কথা জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায় যে তাঁরা ঘরে আছেন। আর ঘরে ঢুকতেই দেখা যায় এমন কাণ্ড।
পুলিশ জানিয়েছে, পায়েলকে খুন করার জন্য যে ছুরি ব্যবহার হয়েছিল, সেটি বিছানার উপর থেকে উদ্ধার হয়েছে। এই ছুরি দিয়েই ফল কেটে বিক্রি করতেন শশধর। পায়েলের বাবার অভিযোগ, এর আগে তার মেয়ের হাতের শিরা কেটে দিয়েছিল শশধর। যার ফলে পায়েল সংসারের কাজ ঠিকমতো করতে পারতেন না। তখন একমাসের জেল হয়েছিল শশধরের। কিন্তু, এরকম হবে জানলে তিনি আর মেয়েকে তার সঙ্গে পাঠাতেন না বলে জানান।