১৮ বছর আগে কেরলের কোল্লাম জেলার আঁচলে এক যুবতী এবং তার যমজ শিশু কন্যাকে খুন করা হয়েছিল। সেই খুনের ঘটনায় এত বছর ধরে পলাতক থাকার পর অবশেষে দু'জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। দুজনই হলেন প্রাক্তন সেনা কর্মী। শনিবার দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা আঁচলের বাসিন্দা দিভিল কুমার এবং কান্নুরের বাসিন্দা রাজেশ।
আরও পড়ুন: বিজেপি নেতা খুনের অভিযুক্তকে পুণে থেকে গ্রেফতার, ময়নার ঘটনায় এনআইএ’র সাফল্য
গ্রেফতারের পর দুজনকে শনিবার কোচির একটি আদালতে তোলা হয়। তাদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। জানা যায়, ২০০৬ সালে আঁচলে রঞ্জিনী নামে এক মহিলা এবং তার যমজ শিশু কন্যাকে খুন করা হয়েছিল। দিভিলের সঙ্গে রঞ্জিনীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। পরে রঞ্জিনী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। কিন্তু, তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে দিভিল। একইসঙ্গে দুই সন্তানকে নিজের বলে।স্বীকার করতে অস্বীকার করে। তখন তরুণী কেরলের রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে যান। ঘটনায় যমজ সন্তানের পিতৃত্ব প্রমাণ করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেয় কমিশন। দিভিল তখন বুঝতে পারে যে ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হতে পারে যে সে যমজ কন্যাদের পিতা। সেই ভয়ে রঞ্জিনীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন দিভিল। এরপর রাজেশের সাহায্যে তাদের হত্যা করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় কেরল পুলিশ এবং সিবিআই উভয়ই তদন্তের সময় দুই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছিল। তবে তাদের কিছুতেই গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। তারা এত বছর ধরে গা ঢাকা দিতে সক্ষম হয়।
সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৮ সালে নির্যাতিতার পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে সিবিআই মামলাটি হাতে নেয়।সিবিআই তদন্তে জানা যায়, যে খুনটি কোল্লামের বাসিন্দা দিভিল কুমার এবং তার বন্ধু রাজেশ করেছিলেন। এরপর থেকেই তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। তবে খুনের পর দিভিল কুমার তার নাম ও পরিচয় বদলে দেয়। সে নিজের নাম রাখে বিষ্ণু।এদিকে, রাজেশও তার নাম পরিবর্তন করে ফেলে। সে নাম রেখেছিল প্রবীণ কুমার। রাজেশ আসল পরিচয় গোপন করে এবং পুদুচেরিতে বিয়েও করেছিল। শুধু তাই নয়, রাজেশ পুদুচেরিতে সম্পত্তি কিনে সেখানে রীতিমতো বসতি স্থাপন করে।সিবিআই বিবৃতিতে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাইয়ের পরে সিবিআই অফিসারদের একটি দল পুদুচেরিতে দুজনকে খুঁজে বের করে এবং শুক্রবার তাদের গ্রেফতার করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সিবিআই তদন্তে জানা গিয়েছে, যে এই খুন ডিভিল কুমার এবং তার বন্ধু রাজেশ দুজনে মিলে করেছিল। আর ২০০৬ সাল থেকে তারা পলাতক ছিল। এই মামলায় সিবিআই আদালতে একটি চার্জশিট দাখিল করে। আদালত তাদের অপরাধী হিসাবে ঘোষণা করেছিল।