পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়া রাজ শামানিকে দেওয়া একটি পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের পতন সম্পর্কে মুখ খুলেছেন সম্প্রতি। কিংফিশার এয়ারলাইন্সের বিলুপ্তির প্রসঙ্গ টেনে মালিয়া ২০০৮ সালের বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দার দিকে সরাসরি আঙুল তোলেন। এই নিয়ে বিজয় বলেন, 'লেম্যান ব্রাদার্সের নাম শুনেছেন কখনও? আপনি কখনও বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের কথা শুনেছেন, তাই না? এতে কি ভারতে কোনও প্রভাব পড়েনি? অবশ্যই পড়েছিল।' (আরও পড়ুন: অ্যাকশন মোডে বেঙ্গালুরু পুলিশ, পদপিষ্ট কাণ্ডে গ্রেফতার RCB-র উচ্চপদস্থ কর্তা)
আরও পড়ুন: ভারতে ফিরবেন আর? প্রশ্ন শুনে যা জবাব দিলেন পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়া...
পডকাস্টে বিজয় মালিয়া বৃহত্তর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরে বলেন, 'প্রতিটি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেই সময়। টাকা পয়সা আটকে গিয়েছিল। লেনদেন শুকিয়ে গেছিল। ধাক্কা খেয়েছিল ভারতীয় টাকার দামও।' উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে অনেক ধুমধামের সাথে চালু হয়েছিল কিংফিশার এয়ারলাইন্স। দ্রুত বিলাসবহুল পরিষেবার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিল সেই উড়ান সংস্থাটি। তবে সংস্থার অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির কারণে লড়াই করছিল সেটি। মালিয়া দাবি করেছিলেন যে তিনি তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। নিজের সংস্থার অপারেশন হ্রাস করার পরিকল্পনা নিয়ে তিনি প্রণববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে দাবি করেন বিজয় মালিয়া। (আরও পড়ুন: মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্বে ১৪% পতন টেসলার শেয়ারে, একদিনে হাওয়া ১৫৩ বিলিয়ন ডলার)
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে নয়া মোড়, যৌন কেলেঙ্কারি মামলার ফাইল নিয়ে ফাটল বোমা
বিজয় মালিয়া বলেন, 'আমি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমার একটা সমস্যা আছে। কিংফিশার এয়ারলাইন্সের উচিত এর অপারেশনের আকার কমানো, বিমানের সংখ্যা কমানো এবং কর্মী ছাঁটাই করা। কারণ এই মন্দা অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আমি কাজ করতে পারছি না। তবে আমার আবেদনের বিরোধিতা করা হয়েছিল। আমাকে অপারেশন কাটছাঁট করতে নিষেধ করা হয়েছিল। আমাকে বলা হয়েছিল, আপনি চালিয়ে যান, ব্যাঙ্কগুলি আপনাকে সমর্থন করবে। এভাবেই সব শুরু হয়েছিল। পরে কিংফিশার এয়ারলাইন্স তাদের সমস্ত উড়ান স্থগিত করতে বাধ্য হয়। কিংফিশার এয়ারলাইন্স ধুঁকছিল। আমি যখন ঋণ চেয়েছিলাম, তখন কোম্পানিটি তেমন ভালো করছিল না।' (আরও পড়ুন: পহেলগাঁও হামলার পর প্রথমবার জম্মু ও কাশ্মীরে মোদী, জল ঢালবেন জঙ্গিদের পরিকল্পনায়)
আরও পড়ুন: 'আমি না থাকলে ট্রাম্প জিততেন না', বন্ধুত্বে ফাটল ধরতেই মিসাইল নিক্ষেপ মাস্কের
মালিয়া ২০১৬ সালে ভারত ছেড়ে চলে যান এবং তখন থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। বর্তমানে তিনি ভারতে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছিলেন, বিজয় মালিয়ার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে করে ১৪,১৩১.৬ কোটি টাকা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে ফিরিয়েছে ইডি। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিজয় মালিয়া দাবি করেন, তাঁর সংস্থা কিংফিশার এয়ারলাইন্সের যত টাকা বকেয়া ছিল, তার থেকে বেশি টাকা ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে। (আরও পড়ুন: অপারেশন ব্লু স্টারের ৪০ বছর পূর্তিতে অমৃতসর বনধের ডাক, সাহস বেড়েছ খলিস্তানিদের!)
আরও পড়ুন: মহুয়াকে বিয়ের শুভেচ্ছা অভিষেকের, কী বললেন তৃণমূল সেনাপতি?
উল্লেখ্য, কিংফিশার এয়ারলাইন্স ঋণ জালিয়াতির মামলায় অভিযুক্ত বিজয় মালিয়া। বিগত বছরগুলিতে বিজয় মালিয়াকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করে গিয়েছে ভারত সরকার। তবে তিনি আপাতত লন্ডনে জীবনযাপন করছেন। উল্লেখ্য, বিজয় মালিয়া এক সময় ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিংফিশার এয়ারলাইন্সের পাশাপাশি ইউনাইটেড স্পিরিট নামক মদ প্রস্তুতকারী সংস্থা চালাতেন তিনি। আইপিএল-এ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দল কিনেছিলেন। ভারতীয় ফুটবলের বহু দলেও তাঁর বিনিয়োগ ছিল। পরে ফর্মুলা ওয়ানেও একটি দল কিনেছিলেন বিজয়। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কগুলি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করার অভিযোগ ছিল। এই আবহে মালিয়ার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলছে।