ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দের আবহে এবার বোমা ফাটালেন ইলন মাস্ক। টেসলা সিইও দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেফ্রি এপস্টেইনের ফাইলগুলি জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি কারণ তাঁর নিজের নাম এতে রয়েছে। 'বিগ বিউটিফুল বিল' নিয়ে সমালোচনা করায় এই ধনকুবের ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন। এই আবহে এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মাস্ক লেখেন, 'সত্যিই বড় বোমা ফেলার সময়: ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম এপস্টাইন ফাইলগুলিতে রয়েছে। সেগুলি জনসমক্ষে না আসার এটাই আসল কারণ।' (আরও পড়ুন: 'আমি না থাকলে ট্রাম্প জিততেন না', বন্ধুত্বে ফাটল ধরতেই মিসাইল নিক্ষেপ মাস্কের)
আরও পড়ুন: ভারতে ফিরবেন আর? প্রশ্ন শুনে যা জবাব দিলেন পলাতক ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়া...
কী এই এপস্টাইন ফাইল?
উল্লেখ্য, জেফ্রি এপস্টাইন নামে আমেরিকায় একজন কুখ্যাত অপরাধী ছিল। এপস্টাইনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও শিশু পাচারের অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, নাবালকদের শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সেলিব্রিটিদের কাছে পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সব নাবালকরা যৌন হেনস্থার শিকার হত রাজনীতিবিদ এবং ধনকুবেরদের হাতে। শুধু তাই নয়, এপস্টাইনের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন নারী যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। মহিলারা বলেছিলেন যে এপস্টাইন তাঁদের এবং তাদের উচ্চ-প্রোফাইল অতিথিদের যৌন পরিষেবা দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। এপস্টনের ব্যক্তিগত ক্যারিবিয়ান দ্বীপ এবং নিউ ইয়র্ক, ফ্লোরিডা এবং নিউ মেক্সিকোতে অবস্থিত বাড়িগুলি এই যৌনতার ঘাঁটি ছিল। (আরও পড়ুন: পহেলগাঁও হামলার পর প্রথমবার জম্মু ও কাশ্মীরে মোদী, জল ঢালবেন জঙ্গিদের পরিকল্পনায়)
আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ মেটানো নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত নবান্নের, বিষয়টি জানতেই হবে সরকারি কর্মীদের…
জেফ্রি এপস্টাইন কে ছিল?
জেফ্রি এপস্টাইন নিউ ইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ডাল্টন স্কুলে শিক্ষক হিসাবে তার পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর ব্যাঙ্কিং ও ফাইন্যান্স সেক্টরের বিভিন্ন পদে কাজ করেন। পরে নিজের ব্যবসা শুরু করেন এপস্টাইন। সেখান থেকে, এপস্টাইন খুব দ্রুত ঊর্ধ্বমুখে ছুটতে থাকেন। এ সময় এপস্টাইন ও তার সহযোগীরা বেশ কয়েকজন তরুণী ও শিশুকে যৌন নির্যাতন ও হয়রানি করেন। ২০০৫ সালে একজন অভিভাবক অভিযোগ দায়ের করে দাবি করেছিলেন যে এপস্টাইন তাঁর ১৪ বছর বয়সি মেয়েকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। এরপরই তদন্ত শুরু করে ফ্লোরিডা পুলিশ। এই তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। দেখা যায় যে এপস্টাইন মোট ৩৬ জন মেয়েকে যৌন নির্যাতন করেছিল। তাদের কারও কারও বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। সে দুটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয় এবং ২০০৮ সালে তাকে সাজা দেওয়া হয়। তবে মাত্র ১৩ মাস কারাগারে কাটানোর পর সে স্বস্তি পায়। এর পেছনে কারণ ছিল একটি বিতর্কিত পিটিশন। কয়েক বছর পরে, ২০১৯ সালে, এপস্টাইনকে আবার গ্রেফতার করা হয়েছিল। এবার তার বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক ও ফ্লোরিডায় অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এসব মামলার শুনানি চলাকালে গত অগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারাগারে আত্মহত্যা করে সে। এর ফলে এপস্টাইন এবং তার অপরাধের সাথে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত জোর ধাক্কা খায়।
এদিকে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে এপস্টাইনের ফাইল ডিক্লাসিফাই করবেন। সেই মতো তাঁর এক নির্বাহী আদেশে অধীনে এই মামলা সংক্রান্ত অনেক ফাইল ডিক্লাসিফাই করা হয়েছিল এবং তা প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, এপস্টাইনের সঙ্গে ট্রাম্পের যোগাযোগ নিয়ে অবশ্য চর্চা বহুকালের। ১৯৯০-এর দশকে সাতবার এপস্টেইনের ব্যক্তিগত জেটের যাত্রী ছিলেন ট্রাম্প। যদিও আজও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যাতে এপস্টেইনের অপরাধের সঙ্গে ট্রাম্পের জড়িত থাকার কথা সামনে আসে।