প্রায় ছয় মাস মধ্যপ্রদেশ সরকারের ৫০,০০০ কর্মী বেতন পাননি। এই সরকারি কর্মীরা খাতায় কলমে উপস্থিত থাকলেও, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে তাদের বেতন প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় গুরুতর অনিয়ম হয়েছে বলে আশঙ্কা। আর তা যদি সত্যি হয়, তাহলে দেশের কোনও রাজ্যের ইতিহাসের এটি অন্যতম বিপুল বেতন স্ক্যাম হতে পারে। (আরও পড়ুন: কাশ্মীর পেল ২ জোড়া বন্দে ভারত, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেল সেতু দিয়ে যেতে কত খরচ?)
আরও পড়ুন: আইফেল টাওয়ার থেকে ৩৫ মিটার উঁচু,মোদীর উদ্বোধন করা চেনাব সেতুতে আছে কলকাতার ছোঁয়া
এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, একাধিক নথি থেকে জানা গেছে, বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে প্রায় ৫০,০০০ কর্মী সরকারি নথিতে উপস্থিত রয়েছেন, তাদের নাম, কর্মী কোডও রয়েছে, তবে কোনও অজানা কারণে, গত ৬ মাস ধরে তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। তবে প্রশ্ন উঠছে-এই কর্মীরা কি ছুটিতে আছেন? নাকি তারা সাসপেন্ড হয়ে গেছেন? নাকি তারা আসলে 'ভুতুড়ে' কর্মী? (আরও পড়ুন: অপারেশন ব্লু স্টারের বর্ষপূর্তিতে 'খলিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান স্বর্ণমন্দিরে)
আরও পড়ুন: এবার ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের দাবি মাস্কের, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান…
আরও পড়ুন: রেপো রেট কমানোর হ্যাটট্রিক RBI-এর, সঙ্গে ক্যাশ রিজার্ভ রেশিওতেও কাটছাঁট
মধ্যপ্রদেশের ট্রেজারি ও অ্যাকাউন্টস কমিশনার ২৩ মে একটি চিঠি পাঠিয়ে, এই অস্বাভাবিক ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, 'আইএফএমআইএস সিস্টেমের অধীনে ৫০,০০০ কর্মীর বেতন প্রক্রিয়া করা হয়নি, তাদের কর্মী কোড সত্ত্বেও যাচাই অসম্পূর্ণ, তাঁরা চাকরি ছেড়েছেন কি না এরও কোনো তথ্য নেই।' এই চিঠি অনুযায়ী, প্রায় ৬,০০০ ড্রয়িং ও ডিসবর্সিং অফিসার বা ডিডিও-কে তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে। তাদের ১৫ দিনের মধ্যে এই অস্বাভাবিকতার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনা সত্যি হলে প্রায় ২৩০ কোটি টাকার জালিয়াতির আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে ট্রেজারি ও অ্যাকাউন্টস কমিশনার ভাস্কর লক্ষ্মকর জানিয়েছেন, 'আমরা নিয়মিত তথ্য বিশ্লেষণ করে থাকি। এক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেছি। এটি কোনও বেতন নেওয়া প্রক্রিয়ার অংশ নয়। আমরা কোনও ধরণের দুর্নীতি বরদাস্ত করবো না।' (আরও পড়ুন: মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্বে ১৪% পতন টেসলার শেয়ারে, একদিনে হাওয়া ১৫৩ বিলিয়ন ডলার)
আরও পড়ুন: অ্যাকশন মোডে বেঙ্গালুরু পুলিশ, পদপিষ্ট কাণ্ডে গ্রেফতার RCB-র উচ্চপদস্থ কর্তা
এনডিটিভি মধ্যপ্রদেশের অর্থমন্ত্রী জগদীশ দেবদাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি যথাযথ কোনও উত্তর দিতে পারেন নি। তিনি বলেছেন, 'যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, তা নিয়ম অনুযায়ী করা হয়।' পুনরায় তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'যা ঘটবে, তা নিয়ম অনুযায়ী হবে।' মধ্যপ্রদেশে এহেন পরিস্থিতি রাজ্য সরকারের জন্য গভীর আশঙ্কার সংকেত। এই 'জালিয়াতি'র ফলে প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্বলতার কথা সামনে আসছে।
আরও পড়ুন-গ্রাহকদের ৪ কোটি টাকা লোপাট! কোটায় গ্রেফতার মহিলা ব্যাঙ্ক আধিকারিক
মধ্যপ্রদেশে বিতর্কিত ৫০,০০০ কর্মীর মধ্যে ৪০,০০০ নিয়মিত কর্মী এবং ১০,০০০ অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। মোট বেতনের পরিমাণ ২৩০ কোটি টাকা। বেতন পরিশোধ না হওয়া কিংবা 'প্রস্থান প্রক্রিয়া' সম্পন্ন না হওয়ার কারণে প্রশাসনে 'ভুতুড়ে' কর্মী থাকার সন্দেহ বাড়ছে। অর্থনীতি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'যদি কেউ ৬ মাস ধরে বেতন না পায়, অথবা কোনও ব্যক্তির চাকরি ছাড়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হয়, তবে তা ভীষণ গুরুতর সমস্যা।' প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকার কতটা নিশ্চিত যে, ৫০,০০০ 'ভুতুড়ে' কর্মী পদে নেই? এই কর্মীরা কোনও দফতরে কর্মরত? রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের কার্যক্রম কীভাবে চলেছে যদি ৯ শতাংশ কর্মী অনুপস্থিত থাকে?