উত্তর প্রদেশের প্রয়ারাজে মহাকুম্ভে মৌনী অমাবস্যার দিনে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে পদপিষ্ট হয়ে। ভয়াবহ সেই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা বহু পরিবারে শোকের ছায়া নামিয়েছে। প্রয়াগরাজ জুড়ে দিকে দিকে মানুষের আর্তনাদের ছবি উঠে আসছে। কেই স্বজনহারা, কেউ স্বজনের খোঁজে, উদ্বেগ, চোখের জল বহু জনের চোখে মুখে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বৃদ্ধার ঊর্মিলা ভুঁইয়া। তাঁর পরিবার শোকে কাতর। ছেলে দুলালের মুখে উঠে এল পরিবারের পরিস্থিতির কথা।
ঊর্মিলাদেবীর ছেলে দুলাল বলছেন,'মা তীর্থস্থান ঘুরতে ভালবাসেন। সেই মতো বোনেদের সঙ্গেই উনি ঘুরতে যেতেন। প্রয়াগরাজে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটবে, বুঝতে পারিনি।' পরিবারের অভিযোগ, বৃদ্ধার মৃত্যুর পর, মৃত্যুর শংসাপত্র পর্যন্ত ঠিকভাবে দেয়নি উত্তর প্রদেশের প্রশাসন। ময়না তদন্ত তো দূর অস্ত, একটি কাগজে এমনটা লেখা হয় যে তিনি মারা গিয়েছেন, এই পর্যন্তই! গোটা ঘটনা নিয়ে মাতৃহারা দুলালবাবু বলছেন,' পদপিষ্টের পর নিখোঁজ ছিল। পরে বোন অঞ্জনা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলে মায়ের দেহ দেখতে পায়। কোনও ডেথ সার্টিফিকেট ওখান থেকে দেওয়া হয়নি। মারা গিয়েছে, এ রকম একটা কাগজ দিয়ে ছেড়েছে।' আর সেই কারণেই ঊর্মিলা দেবীর পরিবার মেদিনীপুরে ময়নাতদন্ত করানোর জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছে।
এদিকে, এলাকার বাসিন্দা ঊর্মিলা দেবীর মৃত্যুর খবর আসতেই তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন বিডিও রোমান মণ্ডল। সঙ্গে যান মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা সহ অনেকেই। যোগী সরকারের পদত্যাগ দাবি করে সুজয় হাজরা বলেন, ‘এত মানুষের সমাগম হবে জানার পরেও কেন আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশে ময়নাতদন্ত না করেই দেহ ছেড়ে দিয়েছে। এরই সঙ্গে বিধায়ক বলছেন,' সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে পরিবার সমস্যায় পড়বে, তাই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত করানো হবে।' এলাকার পুলিশের তরফেও জানানো হয়েছে, দেহ এলেই তা ময়নাতদন্ত করা হবে। প্রসঙ্গত, মহাকুম্ভের আসরে গত ২৯ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যায় অমৃত স্নানের দিন ভয়াবহ এক পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ৬০ জন আহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।