এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্রায় সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের সুপ্রিম নির্দেশ 'অ্যাকসেপ্ট' করার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। প্রায় আধঘণ্টার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর সরকার শীর্ষ আদালতের রায় মেনেই তিনমাসের মধ্যে চাকরি বাতিলের আওতায় পড়া প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মচারীর পুনরায় নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ফেলবে!
যদিও মমতা জানিয়েছেন, এই কাজ করার কথা রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর। এবং তারা একটি স্বতন্ত্র সংস্থা। তাদের কাজে কোনওরকম হস্তক্ষেপ রাজ্য সরকার করে না। কিন্তু, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমে ইতিমধ্য়েই এসএসসি কর্তৃপক্ষকে যা বার্তা দেওয়ার, তা দিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই বিষয়ে রাজ্যের অবস্থান ঠিক কী!
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আজ (বৃহস্পতিবার - ৩ এপ্রিল, ২০২৫) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এসএসসি-র ২-১৬ সালের প্য়ানেলভুক্তদের মধ্যে কারা যোগ্য এবং কারা অযোগ্য, তা আলাদা করা সম্ভব নয়। তাই প্রায় সকলেরই (ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাস ও আগে থেকে চাকরিপ্রাপ্তরা বাদে) নিয়োগ বাতিল করা হল।
একইসঙ্গে, শীর্ষ আদালত এও জানিয়ে দেয়, ওই বছর যাঁরা প্য়ানেলভুক্ত ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই নতুন করে চাকরির পরীক্ষায় বসতে পারবেন। শীর্ষ আদালতের এই বিষয়টিকেই স্বাগত জানিয়েছেন মমতা। এদিন আদালতের রায় প্রকাশ্যে আসার পরই জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, আদালত বলেছে, আগামী তিনমাসের মধ্যে চাকরি হারানো প্রার্থীদের নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়া করা যাবে। তাঁর সরকার দ্রুততার সঙ্গে সেই কাজই করবে।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা শীর্ষ আদালতের রায়ের প্রতিলিপি সঙ্গে নিয়ে বসেন। সেখানে 'কনক্লুশন' বা সমাধান পর্বের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে মমতা বলেন, আদালতের ঘোষিত রায় অনুসারে, যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁরা নতুন করে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তাঁদের বয়সের উর্ধ্বসীমায় ছাড় দেওয়া যাবে। এবং তাঁরা অন্যান্য ছাড়ও পাবেন।... একইভাবে, যাঁরা ওই বছরের প্যানেলভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নন, তাঁরাও একইভাবে বয়সের এই ছাড় ও অন্য়ান্য সুবিধা পাবেন। ফলে তাঁরাও নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন।
মমতার বার্তা, তাঁর সরকার এই রায় অত্যন্ত ইতিবাচক হিসাবে গ্রহণ করছে এবং দ্রুততার সঙ্গে আদালতের নির্দেশ মেনে আগামী তিনমাসের মধ্যেই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মমতা জানান, ইতিমধ্যেই তিনি এই বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক করেছেন। আদালতের নির্দেশ মেনে যা পদক্ষেপ করার সবই এসএসসি করবে। সেখানে রাজ্য় সরকার কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু, রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু উভয় পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।ে