গ্রামীণ মানুষের মাথার উপর ছাদ তুলে দিতে সরকার চালু করেছে ‘আবাস যোজনা’ প্রকল্প। এর মাধ্যমে গৃহহীনদের জন্য বাড়ি তৈরির টাকা দিচ্ছে সরকার। অতীতে আবাসের টাকা ঘিরে বহু দুর্নীতি অভিযোগ সামনে এসেছে। তবে এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে এবার সামনে এল এক ভয়াবহ ঘটনা। অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পে পাওয়া ঘর দখল করতে গিয়ে নিজের বাবাকেই খুন করল ছেলে। মায়ের অভিযোগ, একসঙ্গে দুই ছেলে ও দুই পুত্রবধূ মিলে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বৃদ্ধ বাবাকে।শনিবার সকালে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের মাজু ঘোষালবাটি এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। (আরও পড়ুন: প্রবল সংকট উত্তরপূর্বে, চিন ঘেঁষা জেলা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল বাকি দেশ থেকে!)
আরও পড়ুন: বাংলার বাড়ি প্রকল্পে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ছাড়ছে রাজ্য, পাচ্ছেন ১২ লাখ উপভোক্তা
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শৈল হাজরা, বয়স ৬১। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ছোট ছেলে জয়ন্ত হাজরা ও তার স্ত্রী আশা এবং বৌদি মঙ্গলাকে। পলাতক বড় ছেলে গৌতম হাজরার খোঁজে তল্লাশি চলছে।পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে আবাস যোজনায় ঘর তৈরির টাকা পেয়েছিলেন শৈলবাবু ও তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা দেবী। অভিযোগ, তখন থেকেই দুই ছেলে ও বউমারা ওই টাকা হাতিয়ে নিতে বৃদ্ধ দম্পতির উপর চাপ তৈরি করতে থাকে। এমনকী বৃদ্ধ দম্পতিকে খাবার দেওয়াও বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকেই দম্পতি আলাদা থাকতে শুরু করেন। (আরও পড়ুন: এবার টানা বৃষ্টি, কমবে অস্বস্তিকর গরম, ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি জেলায় জেলায়)
আরও পড়ুন: রাজ্য বকেয়া ডিএ না দিলে 'সুখবর' পেতে পারেন সরকারি কর্মীরা, সামনে বড় দাবি
সম্প্রতি সেই ঘরের নির্মাণকাজ শুরু হতেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ‘ঘরে থাকতে দেবে না’ বৃদ্ধ বাবা মাকে এই হুমকি দিতে শুরু করে ছেলেরা। কয়েকদিন আগে অভিযোগ নিয়ে পঞ্চায়েতের কাছেও যান বৃদ্ধ দম্পতি। কিন্তু, শনিবার সকালেই ঘটে যায় নৃশংস ঘটনা। প্রতিবেশীদের দাবি, সকাল থেকে বৃদ্ধের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে দুই ছেলে ও দুই বউমা। তারা শৈল হাজরাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। সেই সময় আচমকা এক ছেলে একটি ইট তুলে শৈলবাবুর মাথায় সজোরে আঘাত করে। তারফলে ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। মাথা থেঁতলে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে অনুমান পুলিশের।
খবর পেয়ে জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এক ছেলে গা ঢাকা দেয়, বাকি তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃদ্ধার কথায়, সরকারি ঘরের জন্য ছেলেরা তাদের বাবাকে মেরেই ফেলল। তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।