তৃণমূলের অন্দরে আরও কোনঠাসা হলেন ফিরহাদ হাকিম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোপে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এবার হিডকোর চেয়ারম্যান পদ হারাতে চলেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রশাসনিক সংস্কার ও কর্মিবর্গ দফতরের অধীনে আসতে চলেছে হিডকো। যার ফলে হিডকোর চেয়ারম্যান পদ থেকে ফিরহাদের অপসারণ এখন সময়ের অপেক্ষা। বিজেপির চাপেই বিধানসভা ভোটের আগে ফিরহাদের পদস্খলন হতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে হিডকোকে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে পদাধিকার বলে লাগাতার ১৪ বছর হিডকোর চেয়ারম্যান ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই হিডকোকে প্রশাসনিক সংস্কার ও কর্মিবর্গ দফতরের অধীনে আনতে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এই দফতর রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে। ফলে হিডকোর চেয়ারম্যান পদ থেকে ফিরহাদের অপসারণ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। সূত্রের খবর, সেই পদে বসতে চলেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু কেন ফিরহাদকে হিডকোর চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের পরিকল্পনা। তৃণমূল সূত্রে খবর, সম্প্রতি ফিরহাদের একাধিক মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে। কখনও তিনি বলেছেন, ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিরা দুর্ভগ্যের শিকার। সম্প্রতি ‘ফিরহাদ - 30’ নামে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমার স্বপ্ন পশ্চিমবঙ্গের ৫০ শতাংশ লোক একদিন উর্দুতে কথা বলবেন। আল্লাহ তালার দেখানো পথে চললে আমরা সফল হবই।’ সূত্রের খবর, এর পর থেকেই ফিরহাদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মমতা চান না ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি হাতে এমন কোনও ইস্যু পাক। তাছাড়া আগামী অক্ষয় তৃতীয়ায় উদ্বোধন হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। সেই মন্দির তৈরি করেছে হিডকো। তাই মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডে ফিরহাদকে রাখতেই হত। কিন্তু জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডে ফিরহাদ থাকলে মন্দির তৈরির সম্পূর্ণ রাজনৈতিক লাভ পাওয়া যাবে না। তাই তাকে আগেভাগে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এব্যাপারে ফিরহাদ হাকিমের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।