ট্যাংরা কান্ডের ছায়া দেখা গেল কসবায়। রাজডাঙা এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল একই পরিবারের তিন সদস্যের ঝুলন্ত দেহ। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক বৃদ্ধ দম্পতি এবং তাঁদের ৩৮ বছর বয়সি ছেলে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে করছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে মৃত্যুর কারণ। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল ভারতীয়কে, পরে ভুল বুঝে ব্যক্তিকে দেশে ফেরাল BSF)
আরও পড়ুন: পুলিশ অফিসারের রিভলভার ছিনিয়ে নিজেকে গুলি, ১০দিন পর মৃত্যু সেই কনস্টেবলের
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দিন সন্ধ্যায় কসবা থানায় একটি ফোন আসে। জানানো হয়, ৫০ নম্বর রাজডাঙা গোল্ড পার্কের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে পরিবারটি দীর্ঘ সময় ধরে দরজা খুলছে না। ফোনেরও উত্তর মিলছে না। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই তিনজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। মৃতদের নাম সরজিৎ ভট্টাচার্য (৭০), স্ত্রী গার্গী (৬৮) এবং ছেলে আয়ুষ্মান ভট্টাচার্য (৩৮)। ঘটনাস্থল থেকে একটি নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা ছিল, ‘ইশ্বরের দেওয়া প্রাণ। আমরা ঈশ্বরের সঙ্গে মিলে যাব। স্বেচ্ছায় আমরা মৃত্যুবরণ করলাম।’ সেই নোটে বাড়ির মালিককে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে, তাঁরা তিন মাসের ভাড়া ও বিদ্যুতের বিল দিতে পারেননি। বাড়ি ভাড়ার অগ্রিম টাকা দেওয়া থাকলেও আরও প্রায় পাঁচ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা মুকুব করে দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি অনুরোধ জানানো হয়েছে, তাঁদের মৃতদেহ যেন ভালোভাবে সৎকার করা হয়। (আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ না মিটিয়ে কি ফের আদালতে রাজ্য? মামলা নিয়ে সামনে এল বড় দাবি)
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরিবারটি আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, একসময় একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন এবং পরবর্তীতে সম্পত্তির দালালি করতেন। গার্গীদেবী ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা। তাঁদের ছেলে আয়ুষ্মান বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন ছিলেন। (আরও পড়ুন: BSF-এর জালে ২ হিন্দু সহ ৫ বাংলাদেশি, অনুপ্রবেশকারীদের ফেরানো হল নিজেদের দেশে)
স্থানীয়দের দাবি, পরিবারটি সাত মাস আগে ওই ফ্ল্যাটে আসে। সাধারণত খুব একটা বাইরে দেখা যেত না। কয়েকজন প্রতিবেশীর কথায়, সরজিৎবাবু মাঝে মধ্যে আর্থিক সমস্যার কথা বলতেন। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) রূপেশ কুমার বলেন, তিনি একসময় সম্পত্তির দালাল হিসেবে কাজ করতেন। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে। একটি নোট উদ্ধার হয়েছে, তদন্ত চলছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, মা ও ছেলের শরীরে কিছু চিহ্ন দেখা গিয়েছে। তবে পুলিশ এই তথ্যের সত্যতা এখনও নিশ্চিত করেনি। বুধবার তিনজনের দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। পাশাপাশি, মৃতদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।