কনকনে শীত পড়েছে। তাই বেশি রাতে কেউ বাইরে থাকেন না। এখন সন্ধ্যা থেকে রাত নামলেই গ্রামবাসীরা বাড়ির দিকে রওনা হন। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত চন্দ্রকোনা ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারলেন না গ্রামবাসীরা। তার কারণ রাতভোর এখানে প্রায় ৫০টি গজরাজের দল দাপিয়ে বেড়াল। তার জেরে রাতের ঘুম মাথায় উঠল অনেকের। চন্দ্রকোনা শ্রীনগর এবং গড়বেতার সন্ধিপুর, চৈতন্যপুরের মাঠে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় হাতির দলটি। তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আজ, মঙ্গলবার অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা।
এই হাতির দলের তাণ্ডবে নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায় গ্রামের মানুষজন এবং বন দফতর থেকে আসা কর্মীরা। বিভিন্নভাবে জঙ্গলে এবং মাঠে শীতের ফসল ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় হাতিগুলি। তাতে আরও সমস্যা তৈরি হয়। এই ঘটনা দেখে মাথায় হাত পড়েছে জেলার চাষিদের। দুর্ঘটনা এড়াতে জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে বন দফতর। সেখানে চলছে মাইক প্রচার। তবে অবশেষে বন দফতরের কর্মীদের প্রচেষ্টায় ৫০টি হাতির পালটিকে মাঠ থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয় জঙ্গলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্যালকের অণ্ডকোষে কামড় বসাল জামাইবাবু, রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটল ক্যানিংয়ে, ভর্তি হাসপাতালে
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাতির দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হযেছে বেশ কয়েকশো বিঘা জমি। শীতের ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আলু–সহ নানা শীতের সবজি হাতির পায়ের তলায় পড়ে নষ্ট হয়েছে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে ধার–দেনা করে আলু লাগিয়ে চাষ করেছিলেন কৃষকরা। তাই সেসব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চিন্তিত কৃষকরা। তার উপর গজরাজের এই অত্যাচারে জর্জরিত একাধিক কৃষক পরিবার। কারণ সর্বত্র আমন ধান কাটার কাজ শেষ হয়নি। বিস্তীর্ণ এলাকায় কাটা ধান জমিতেই জড়ো করে রেখে জমিতে আলু চাষ করতে ব্যস্ত কৃষকরা। এমন সময় হাতির তাণ্ডবে তা নষ্ট হল।
একদিকে আলু চাষ অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর অনেকটাই কম হয়েছে। তার উপর অপরদিকে ৫০টি হাতির দল নষ্ট করল আলু চাষের জমি। কোথাও সবে লাগানো আলু, কোথাও আবার গাছ বেরিয়ে গিয়েছে। সেগুলিকে কেমন করে চাষের উপযুক্ত করা হবে সেটা ভেবে উঠতে পারছে না একাধিক কৃষক। যদিও বন দফতরের পক্ষ থেকে এখনও কোনও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার কথা আশ্বাস মেলেনি। বন দফতরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হাতির দলটির গতিবিধির উপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি রাখার জন্য বন কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।