সন্দেশখালিতে বিজেপিতে বড়সড় ভাঙন। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সদ্য হওয়া বিজেপির সভার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় পাল্টা সভা করে তৃণমূল কংগ্রেস শক্তি প্রদর্শন করল। রবিবার কানমারির ভারত সেবা সংঘের মাঠে রাজ্যের দুই মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ও সুজিত বসুর উপস্থিতিতে কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন বলে দাবি ঘাসফুল শিবিরের। যোগদানকারীদের মধ্যে রয়েছেন সন্দেশখালি আন্দোলনের পরিচিত মুখ লতিকা মিস্ত্রি ও সুদেষ্ণা দাস।
আরও পড়ুন: শঙ্কর ঘোষকে নিয়ে কুরুচিকর পোস্ট, ‘রহস্যময়ী’ মহিলার বিরুদ্ধে থানায় বিধায়ক
এই সভাকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। শুভেন্দু অধিকারীর সভার পরে তৃণমূলের এমন পাল্টা কর্মসূচি ও দলবদলের ঘটনার রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক। বিশেষত, বিধানসভা ভোটের দোরগোড়ায় বিজেপির ঘাঁটি বলে পরিচিত সন্দেশখালিতে শাসক দলের এই শক্তি প্রদর্শন নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এদিন সভা থেকে বীরবাহা হাঁসদা কড়া ভাষায় আক্রমণ শানান শুভেন্দু অধিকারীর দিকে। তাঁর বক্তব্য, শুভেন্দু আজ আবোল-তাবোল বলছেন। মানুষকে উস্কানি দিচ্ছেন। ওঁর জায়গা বাংলার রাজনীতিতে নেই। বিজেপি আগে অন্য রাজ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্প চালু করুক, তারপর বাংলার কথা ভাবুক।
তৃণমূলের দাবি, যারা এদিন যোগ দিয়েছেন, তারা অনেকেই আগে থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে নানা পরিস্থিতিতে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন। এবার ভুল ভাঙায় তাঁরা ফের ফিরে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে। লতিকা মিস্ত্রি স্পষ্ট বলেন, এক সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে দল ছেড়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি যে শুধু প্রলোভন দিয়ে ব্যবহার করেছে, এখন তা বুঝে গিয়েছেন। সুদেষ্ণা দাসও জানান, ‘বিজেপির কথায় বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। এখন দেখছি সন্দেশখালিতে শান্তি ফিরেছে, দোষীরা জেলে। আমরা কোনও ভয় বা চাপ থেকে নয়, স্বেচ্ছায় দলে ফিরে এসেছি।’
তৃণমূল নেতা সুজিত বসু বলেন, এটা প্রমাণ করে মানুষ আসল উন্নয়নের পক্ষেই রয়েছে। সন্দেশখালিতে আর বিভ্রান্তি চলবে না। সাতটি বিধানসভায় আবার জিতবে তৃণমূল, এটা নিশ্চিত। তবে বিজেপির দাবি, এই যোগদান আসলে নাটক। সন্দেশখালিতে বিজেপির ভিত শক্ত। কয়েকজন যোগ দিলেই বিজেপি দুর্বল হবে না। তৃণমূল জনমত হারাচ্ছে বলেই এভাবে নাটক করছে। উল্লেখ্য, গত ৮ জুন শুভেন্দু অধিকারী ওই একই মাঠে সভা করে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। মহিলাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠে তাঁর বিরুদ্ধে।