ফারাক্কার মহাদেবনগর এবং দক্ষিণ মালদার নিমলতালা মন্দির এলাকায় নতুন করে হিংসা ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করলেন ইংরেজ বাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তিনি দাবি করেছেন, এই মুহূর্তে সেই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। তবে তাঁকে ফোন করে হিংসার খবর জানিয়েছেন অনেকে। এই আবহে তিনি বিএসএফের সঙ্গে কথা বলে হিংসা কবলিত এলাকায় বাহিনী পাঠানোর বন্দোবস্ত করছেন বলে দাবি করেছেন। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন তিনি। (আরও পড়ুন: 'ধর্মনিরপেক্ষতার ট্যাবলেট খাইয়ে...', ওয়াকফ হিংসা নিয়ে অভিষেককা পালটা সুকান্তর)
আরও পড়ুন: WAQF হিংসায় তপ্ত মুর্শিদাবাদ,চায়ে চুমুক দিয়ে 'মুহূর্তে ডুব' TMC MP ইউসুফ পাঠানের
নিজের পোস্টে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী লেখেন, 'ফারাক্কার মহাদেবনগর এবং দক্ষিণ মালদার নিমতলা মন্দির এলাকায় অসহায় হিন্দুরা ফোন করে জানিয়েছে যে তাদের ওপর হামলা হচ্ছে এবং মন্দিরে ভাঙচুর হচ্ছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় এখনই সেই সব ঘটনার ছবি সামনে আসেনি। তবে আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি যাতে দ্রুত সেখানে বিএসএফ মোতায়েন করা যায়।' এরপর তিনি জানান, বিএসএফের সঙ্গে মিলে বেশ কয়েকজন নারী এবং শিশুকে পারলালপুর স্কুলে নিয়ে এসেছেন। তিনি খাদ্যের বন্দোবস্তও করেছেন বলে দাবি করেন। পাশাপাশি গুজবে কান না দেওয়ার জন্যে আবেদন করেন তিনি।
এর আগে আজ সকালে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী একটি পোস্ট করে দাবি করেছিলেন সামশেরগঞ্জের ৪০০টি পরিবার হিংসার জেরে ঘরবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণ মালদার পারলালপুরে চলে আসেন। তিনি নিজের পোস্টে লিখেছিলেন, 'সামশেরগঞ্জের ৪০০টি হিন্দু পরিবার মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পারলালপুর হাই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ সকালে এই সব পরিবারের জন্য কোনও খাদ্য বা পানীয় জলের ব্যবস্থা করেনি মমতার সরার। দক্ষিণ মালদায় একটি বড় মানবিক সংকট দেখা দিচ্ছে।'
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ স্থানীয়দের। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এলাকায় এখন বিএসএফ টহল দিচ্ছে। জানা গিয়েছে, সামশেরগঞ্জের রানিপুরের জাফরাবাদে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ, বাবা ও ছেলেকে প্রথমে পেটানো হয়েছে, তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাড়ি ও টোটো। অভিযোগ, পুলিশকে বারবার ফোন করা হলেও পুলিশ আসেনি।
এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এদিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয় এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলে লুটপাট চালানো হয়। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। হেনস্থা করা হয় বিধায়ককে। জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি এলাকায় টহল দিচ্ছে বিএসএফ।