চাকদায় মোটরবাইক পাচারচক্রে পুলিশের ভূমিকাকে ঘিরে বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এল। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন চাকদহ ট্রাফিক গার্ডের ওসি কুন্তল অধিকারী। তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি এক বাইক মালিক অভিযোগ তুলেছেন, চুরি যাওয়া বাইক উদ্ধার হওয়ার পর তা ফেরত না দিয়ে টাকা নিয়ে নাকি অন্য এক ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছেন। অভিযোগপত্র ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে জমা পড়েছে। অভিযোগকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাইকের টিউবের ভিতর গয়না রেখে পাচারের চেষ্টা! বানচাল করল BSF, ধৃত পাচারকারী
চাকদার বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা শিবশংকর সিংয়ের দাবি, মাস কয়েক আগে পরিচিত বন্ধু দেবাশিস দেবনাথকে তাঁর একটি রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০ কিছুদিনের জন্য ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বহুবার চাইলেও দেবাশিস বাইকটি ফেরত দেননি। গত ৭ জুন, স্থানীয় বিটু পাইনের গ্যারেজে নিজের বাইকটি দেখতে পান শিবশঙ্কর। অভিযোগ, তখন বাইকটির সাইলেন্সার, ব্যাটারি, আয়না-সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করে বাইকের চেহারা বদলে ফেলার চেষ্টা চলছিল। তিনি সঙ্গে-সঙ্গে বিষয়টি চাকদা ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি কুন্তল অধিকারীকে জানান। সেইসঙ্গে বাইকের বৈধ কাগজপত্র হোয়াটসঅ্যাপ মারফত পাঠান।
অভিযোগ উঠেছে, কুন্তল প্রথমে ট্রাফিক পুলিশের কর্মীদের পাঠিয়ে বাইকটি উদ্ধার করে ট্রাফিক অফিসে নিয়ে আসেন। কিন্তু অভিযোগ, ওই বাইক তিনি কাগজপত্র দেখার পরেও মালিককে ফেরত পাননি। বরং ৯ জুন রাতে কুন্তল অধিকারী বাইকটি কামালপুরের বাসিন্দা সুব্রত দে ওরফে বাপ্পার হাতে তুলে দেন। এরজন্য টাকার লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ শিবশংকরের।
পরে ১০ জুন তিনি বিষয়টি জেলা ট্র্যাফিক ডিএসপিকে জানান। এর ঠিক পরদিন, ১১ জুন রাতে তাঁকে ট্রাফিক অফিসে ডেকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ ও অকথ্য গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। এফআইআর করতে চাইলে ওসি নাকি তাঁকে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এসপি, ডিএসপি, কেউ আমার কিছু করতে পারবে না। আমি সবাইকে টাকা দিই।’
এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে শিবশংকর সিং সরাসরি অভিযোগ জানিয়েছেন পুলিশ সুপারের কাছে। এই ঘটনার সঙ্গে চাকদা থানার আইসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ও জড়িত কিনা, তাও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও, গোটা ঘটনাটির সময়কালের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণেরও দাবি জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।