লক্ষ্য সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা। সেই লক্ষ্য়ে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ মিছিলে পোড়ানোর হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল। আবার, সেই একই মিছিল থেকে উঠল স্বদলীয় সাংসদ শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে তীর্যক স্লোগান! বুধবার এই ঘটনা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় অনুব্রত মণ্ডলের জেলা বীরভূমে। যদিও বিষয়টিকে আমল দিতে নারাজ বীরভূমের চারবারের সাংসদ শতাব্দী নিজে। 'বিচ্ছিন্ন ঘটনা' বলে দায় এড়ালেন বীরভূমের মুরারই-১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বিনয়কুমার ঘোষও।
প্রসঙ্গত, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই দেশজুড় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। তৃণমূল কংগ্রেস-সহ অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি একাধিক সংখ্যালঘু সংগঠনও এই নয়া সংশোধিত আইনের প্রতিবাদে সরব হয়েছে। মামলা রুজু করা হয়েছে দেশের সুপ্রিম কোর্টে। যে মামলার শুনানি শুরু হবে আগামী ১৬ (২০২৫) এপ্রিল থেকে।
এই প্রেক্ষাপটে বীরভূমের মুরারইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়। সেই মিছিলে লোক হয়েছিল ভালোই। সেই মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের একাংশকেই স্লোগান দিতে শোনা যায় - 'স্যালাইন এমপি-কে মানছি না, মানব না!'
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি, 'স্যালাইন এমপি' বলে এখানে স্থানীয় সাংসদ শতাব্দী রায়কেই বোঝানো হয়েছে। তার কারণ - ওয়াকফ সংশোধনী নিয়ে লোকসভায় যখন বিতর্ক বা বিল পেশ প্রক্রিয়া চলছিল, সেই মুহূর্তে সেখানে গরহাজির ছিলেন বীরভূমের সাংসদ। যা নিয়ে দলের অন্দরেই একাংশ তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ বলে দাবি সূত্রের।
কিন্তু, শতাব্দী নিজে পরবর্তীতে জানান, ওই দিন তিনি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয়েছিল। এমনকী, তাঁকে স্যালাইনও দিতে হয়েছিল সুস্থ করে তোলার জন্য। অনুমান করা হচ্ছে - এই কারণেই মুরারইয়ের প্রতিবাদ মিছিল থেকে তাঁকে 'স্যালাইন এমপি' বলে কটাক্ষ করা হয়! যদিও গত দু'বারের লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের হিসাব কষলে দেখা যাবে - এই মুরারই থেকেই সবথেকে বেশি ভোট পেয়েছেন শতাব্দী।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কম-কে শতাব্দী জানিয়েছেন, 'আমি মনে করি না, যাঁরা এমন স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁরা দলের কেউ। দলের কেউ এমন স্লোগান দেবেন না।' একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আগের তুলনায় আপাতত কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সাংসদ হিসাবে তাঁর জন্য় বরাদ্দ কাজকর্মও ফের করতে শুরু করেছেন।
তবে, শতাব্দী যাই বলুন, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই অস্বস্তি তৈরি হয়েছে বলে দাবি সূত্রের। বিশেষ করে অনুব্রত মণ্ডল 'ফিরে আসার পর' এই ঘটনা ঘটায়, অস্বস্তি আরও বাড়ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
যদিও এই ঘটনাকে একেবারেই আমল দিতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম আয়োজক বিনয়কুমার ঘোষ। 'ছেলেপিলেদের কেউ হয়তো' এমন কোনও স্লোগান দিয়ে ফেলেছে বলে দাবি করেন তিনি! এবং তাঁর মতে, সেটা নাকি একেবারেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা!