কামারহাটির বিধায়কের মারাত্মক অভিযোগ, সাগর দত্ত হাসপাতালে আইসিসিইউ’র জন্য ৬০০০ টাকা, রক্তের জন্য ১৭০০ টাকা দর হাঁকানো হচ্ছে। অভিযোগ, রমেন হালদার নামে এক রোগীকে ভর্তি করার জন্য তাঁর পরিবারের কাছে সিসিইউ’র বেডের জন্য ৬ হাজার টাকা এবং রক্তের জন্য ১৭০০ টাকা দাবি করেছে দালালরা।
হাসপাতালে দালালরাজ নিয়ে সরব হলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র।
সাগর দত্ত হাসপাতালে দালালরাজ নিয়ে এবার সরব হলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। মোটা টাকার বিনিময়ে আইসিসিইউ’র বেড থেকে রক্ত বিক্রির অভিযোগ তুললেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। এমনকী এমন ঘটনা ঘটছে বলে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন মদন মিত্র। তারপর দালালরাজ নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেন তিনি। যা নিয়ে অবশ্য প্রশাসন এবং সাগর দত্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। হাসপাতালে দাঁড়িয়েই এদিন দালালদের হুঁশিয়ারি দেন বিধায়ক মদন মিত্র।
এদিকে কামারহাটির বিধায়কের মারাত্মক অভিযোগ, সাগর দত্ত হাসপাতালে আইসিসিইউ’র জন্য ৬০০০ টাকা, রক্তের জন্য ১৭০০ টাকা দর হাঁকানো হচ্ছে। অভিযোগ, রমেন হালদার নামে এক রোগীকে ভর্তি করার জন্য তাঁর পরিবারের কাছে সিসিইউ’র বেডের জন্য ৬ হাজার টাকা এবং রক্তের জন্য ১৭০০ টাকা দাবি করেছে দালালরা। মদন মিত্র বলেন, ‘প্রত্যেকদিন রাতে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্ত বিক্রি হয়। এই র্যাকেটের পিছনে কারা রয়েছে, সেটা বের করার জন্য পুলিশের কাছে বলব। অভিযুক্ত দালালের পরিচয় আমরা ৯০ শতাংশ পেয়ে গিয়েছি। আমি কথা দিলাম, এটাই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের শেষ দালালরাজ। এরপর যদি আর একটা দালালকে ধরতে পারি, প্রথমেই আমার এলাকার মানুষকে বলব মারবেন না। শুধু পুলিশে দেওয়ার আগে একবার আমাদের হাতে দেবেন।’
অন্যদিকে এই অভিযোগ এবং হুঁশিয়ারি স্বয়ং বিধায়কের মুখ থেকে বেরিয়ে আসায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। প্রশাসনকে পদক্ষেপ করার অনুরোধ করে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে গোটা বিষয়টা দেখতে বিধায়ক হিসেবে বলছি। প্রয়োজন পড়লে তাঁদের পায়ে পড়ে অনুরোধ করব, যে আপনারা মানুষগুলিকে এভাবে মরতে দেবেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশে ফিরলে তাঁকেও গোটা ঘটনা জানাব। মুখ্যমন্ত্রী ফিরলে চিঠি দেব। তাঁর ব্রেন চাইন্ড যা করোনাভাইরাসের সময় হাজার হাজার মানুষকে সুস্থ করেছে, সেখানেই চলতে থাকা দালালরাজ আপনার মুখে চুন–কালি দিচ্ছে।’
আর কী বলেছেন বিধায়ক? এই টাকা চাওয়ার ঘটনা মদন মিত্রকে ফোন করে জানান রোগীর পরিবার। তারপরই বিধায়ক ছুটে আসেন। যদিও রোগীটি মারা গিয়েছেন বলে খবর। আর এখানে এসেই সবটা জানতে চান। তখন রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় বিধায়ককে, টাকা না দেওয়ায় হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে ওই দালাল। বিধায়কের কথায়, ‘দালালচক্র এখন দেখে নেওয়ার সময় এসেছে। দালালদের কাছে সরকার মাথা নত করে নেবে? এটা হতে পারে না।’ এবার যে কামারহাটির বিধায়ক কড়া পদক্ষেপ করবেন সেটা বোঝাই যায়। তাই মদন মিত্র আগামী মঙ্গলবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকও ডেকেছেন।