জলজীবন মিশনেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ না আসায় থমকে রয়েছে জলজীবন মিশনের অগ্রগতি। ফলস্বরূপ ধীর গতিতে এগোচ্ছে পাইপলাইনের কাজ, ব্যাহত হচ্ছে বাড়িতে সরাসরি জলের সংযোগ। এমনই ছবি উত্তর দিনাজপুর জেলার। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, অর্থের ঘাটতির কারণে একদিকে যেমন ঠিকাদারি সংস্থাগুলির উৎসাহ কমছে, অন্যদিকে সময়মতো লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
আরও পড়ুন: 'জল জীবন মিশন' প্রকল্পে পিছনের সারিতে বাংলা, মাত্র ৩৭ শতাংশ কাজ এগিয়েছে
সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুরে জলজীবন মিশনের আওতায় প্রায় ৭০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। যার বড় অংশটাই আসার কথা ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। তবে দীর্ঘদিন এই অর্থ না আসায় সমস্যায় পড়েছে প্রশাসন। প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থাগুলিও একপ্রকার থমকে পড়েছে কাজের গতি নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের তরফে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলার জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ইঞ্জিনিয়ার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, স্থানীয় বিধায়ক ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।
বৈঠকে জেলাশাসক সাফ জানিয়ে দেন, অর্থ জট মেটার অপেক্ষায় না থেকে যে কাজ বাকি রয়েছে তা যথাসম্ভব দ্রুত শেষ করতে হবে। বিশেষ করে গোয়ালপোখর-২ এবং করণদিঘি ব্লকে যেখানে অগ্রগতি অত্যন্ত কম, সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্লকের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক উত্তরবঙ্গ সফরের সময় জেলা পর্যায়ে জলজীবন মিশনের কাজের গতি নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তার পরেই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার তালিকায় তুলে আনে জেলা প্রশাসন। বকেয়া অর্থ পাওয়া এবং কেন্দ্রীয় বরাদ্দ দ্রুত ছাড় করানোর চেষ্টাও জোরদার করা হয়েছে।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরে ৫ লাখ ৮১ হাজার বাড়িতে জলসংযোগ দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২ লাখ ৩৭ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছেছে। অর্থাৎ, প্রকল্পের মোট অগ্রগতি ৪১ শতাংশ। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত অর্থ এলে আগস্টের মধ্যে আরও ২৪ হাজার বাড়িতে সংযোগ দেওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে প্রকল্পের মোট অগ্রগতি পৌঁছাবে ৪৫ শতাংশে। দফতরের দাবি, চলতি বছরের মার্চ মাসে রাজ্য সরকারের তরফে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, যা ঠিকাদার সংস্থাগুলির হাতে পৌঁছেছে। তবে পুরো প্রকল্পে কাজের তুলনায় এই অঙ্ক সামান্যই। ঠিকাদাররা জানাচ্ছেন, যদি পূর্ণ বরাদ্দ না পাওয়া যায়, তাহলে কাজ চালানো সম্ভব নয়।