রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফলের ধারা অব্যাহত রাখল প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। প্রায় তিন দশকের বেশি সময় পর বৈদ্যবাটি শেওড়াফুলি কো–অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পরিচালকমণ্ডলীর নির্বাচনে গোহারা হারল বিজেপি। খাতাই খুলতে পারল না গেরুয়া শিবির। রবিবার সকাল ১০টা থেকে বৈদ্যবাটি শেওড়াফুলি এবং ভদ্রেশ্বরে শহরের মোট ৯টি স্কুলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ব্যাঙ্কের প্রায় ১৩ হাজার সদস্য ভোটার হিসাবে অংশগ্রহণ করেন। সকাল থেকেই কড়া পুলিশের পাহারার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ভোটগ্রহণ পর্ব। মোট ১৮টি কেন্দ্রে ৯১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তার মধ্যে ৪৪ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। আটটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা।
এই সমবায় নির্বাচন শেষ হয় দুপুর ৩টের সময়। তার কিছুক্ষণ পর ফল বেরোতেই দেখা যায়, তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা ৪২টি আসনে জয়ী হয়েছে। আর দুটি আসনে জয়ী হয় বাম–কংগ্রেস জোট। এখানে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপি প্রার্থী দিলেও তারা খাতা খুলতে পারেনি। উপনির্বাচনের হারের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার বড় পরাজয়ের মুখ দেখতে হল বঙ্গ–বিজেপিকে। এই ফলাফল প্রকাশ পাওয়ার পর জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে সবুজ আবির খেলায় মেতে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। সমবায় নির্বাচনে বাম–কংগ্রেস জোট খাতা খুলে এগোলেও বিজেপির কাছে আজকের দিনটি বেশ অস্বস্তির হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করল সিভিক ভলান্টিয়ার, নগ্ন ছবি ভাইরালের অভিযোগ
হুগলি জেলায় বরাবরই সংগঠন মজবুত ঘাসফুল শিবিরের। বিধানসভা, লোকসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে বারবার সাফল্য পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। হুগলি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরিন্দম গুইন বলেন, ‘ধন্যবাদ জানাই কো–অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সমস্ত সদস্যদের। যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর সমস্ত আস্থা, ভরসা, বিশ্বাস রেখেছেন। ভোটকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে মানুষের মধ্যে উন্মাদনা ছিল। মানুষ বুঝে গিয়েছে ৩৪ বছর যে দলটা পশ্চিমবঙ্গে ছিল সেই বামফ্রন্ট সরকার মিথ্যাবাদী ও অত্যাচারের সরকার ছিল। আর যে সরকার কেন্দ্রে আছে সেই সরকার মানুষকে কথা দিয়ে কথা রাখে না। বাংলার মানুষের টাকা আটকে রাখে। তাই বাংলার মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এই নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বামেরা এবং কংগ্রেস। তারা আজ, রবিবার বিকেলে শেওড়াফুলি ফাঁড়ির মোড় অবরোধ করে। যদিও তাতে বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। ছুটির দিন থাকায় মানুষকে কম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ভোটগ্রহণ শুরু হতেই সিপিএম–ফরওয়ার্ড ব্লক এবং কংগ্রেসের জোট প্রার্থীদের নির্বাচন কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। বিজেপিকেও ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর শেওড়াফুলি ফাঁড়ির মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বাম কংগ্রেস বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের লোকজন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকে ভোট লুট করেছে বলে বিরোধীদের দাবি।