পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ কাণ্ডে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যার মধ্যে দুজন হলেন বি টেক ইঞ্জিনিয়ার এবং একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। ধৃতদের কাছ থেকে এক লক্ষের বেশি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এছাড়াও, বাজেয়াপ্ত হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগজিন, কার্তুজ ও ছুরি। এছাড়াও, অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তাদের আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বেচারক।
আরও পড়ুন: কলকাতার ব্যবসায়ী অপহরণ কাণ্ডে ধৃত আরও ৫, ফেরার সাংবাদিককে খুঁজছে পুলিশ
জানা গিয়েছে, জয়ন্ত গড়াই নামে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছিল গত ১০ জানুয়ারি। পানাগড় বাইপাস সংলগ্ন এলাকা থেকে কাঁকসার বিরুডিহার বাসিন্দা জয়ন্তকে ৫ থেকে ৬’জন দুষ্কৃতী মিলে অপহরণ করে। প্রথমে মুক্তিপণ বাবদ ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে ১০ লক্ষ টাকায় রফা হলেও শেষ পর্যন্ত ৬ লক্ষ টাকা দেয় ব্যবসায়ীর পরিবার। এরপর তাকে মারধর করে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় ব্যবসায়ীর পরিবার বুদবুদ থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
ঘটনার তদন্তে নেমে ১৩ দিনের মাথায় অপহরণের সঙ্গে যুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (ইস্ট) অভিষেক গুপ্তা জানিয়েছেন, বিভিন্নভাবে তদন্ত করে বেশ কিছু সূত্র পাওয়ার পর অবশেষে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জানান, ধৃতরা হলেন অভিজিৎ চক্রবর্তী, সুপ্রিয় খাওয়াস, সঞ্জীব বিশ্বাস, সোহম চট্টোপাধ্যায় ও বিমলেশ কুমার ঠাকুর। এরা সকলেই দুর্গাপুর এবং কাঁকসা এলাকার বাসিন্দা।
এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত আছে কিনা তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তিনি জানান, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সোহম এবং সুপ্রিয় নিজেদের বি টেক এবং এম টেকের ছাত্র বলে দাবি করেছে। এরমধ্যে সুপ্রিয় বি টেক করার পর ইসিএলে চাকরি করছেন। আর সোহম এম টেক করছেন। যদিও এর স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছেন ডিসিপি।প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে দুজনেই নেশায় মত্ত থাকত। তাই নেশার জন্য টাকা জোগাড় করতেই ব্যবসায়ীকে অপহরণে যোগ দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসায়ীকে অপহরণের ছক কষেছিলেন বিমলেশ এবং সঞ্জীব। বিমলেশ আগে জয়ন্তর কাছে চাকরি করতেন। তবে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। যদিও অপহরণের সময় তিনি ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, বিমলেশ সঞ্জীবের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে সঞ্জীবের কাছে গাড়ি না থাকায় সে তার দীর্ঘদিনের বন্ধু সুপ্রিয়র সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে সুপ্রিয় গাড়ি চালক অভিজিৎ এবং সোহমের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে এবং ঘটনাস্থলের আশেপাশের ১০০টি সিসিটিভি খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয় এবং তাদের গ্রেফতার করা হয়। সোমবারে তাদের মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। সেখানে তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।