বিজেপি মনে করছে এখানের হিন্দু ভোট তাঁদের দিকেই যাবে। আর সেটাকে ধরে রাখতে গেলে নানা প্রকল্পকে সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন। সদ্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরামবাগে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দীপক অধিকারী ওরফে দেব। এখান থেকেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান ঘোষণা করা হয়েছিল।
আরামবাগকে টার্গেট করেছে বিজেপি।
সামনে লোকসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগে দেশের সমস্ত রাজ্যে চষে ফেলতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাত পোহালেই মার্চ মাস। এই মাসের পয়লা এবং দ্বিতীয় তারিখে ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহার—তিন রাজ্যে পা রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলার আরামবাগে ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। আসলে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নানা প্রকল্পকে হাতিয়ার করে ভোট বৈতরণী পার করতে চাইছেন তিনি। এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রকে বেছে নেওয়া হল?
এদিকে আরামবাগ, কৃষ্ণনগর আসন দুটিকে টার্গেট করেছে বিজেপি। তাই প্রকল্প দিয়েই শুরু করা হচ্ছে প্রচার। কৃষ্ণনগর আসনটি জিতেছিলেন মহুয়া মৈত্র। যাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র জেতেন অপরূপা পোদ্দার। এখন অপরূপা পোদ্দার পিছনে লেগেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। নারদ কাণ্ডে নাম আছে। তবে সে নাম শুভেন্দু অধিকারীরও আছে। তাই প্রকল্প উদ্বোধন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আরামবাগে এসে রেল, বন্দর, তেলের পাইপলাইন, গ্যাস সরবরাহ এবং জল পরিশোধনের প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে শুধু এই জন্যই আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রকে টার্গেট করা হয়েছে তা নয়।
অন্যদিকে আরও কারণ রয়েছে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে। তার মধ্যে বড় কারণ হল, অপরূপা পোদ্দার এখানে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন মাত্র ১১৪২ ভোটে। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, গোটা রাজ্যে সর্বনিম্ন ব্যবধানে জয় এই আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র। এমনকী আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের ইতিহাসেও তাই। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পান ৬ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯২৯টি ভোট (৪৪.১৫%)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী তপন রায়ের প্রাপ্ত ভোট ৬ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৮৭ (৪৪.০৮%)। এই অঙ্ক থেকেই এবার টার্গেট করা হয়েছে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রকে। এখানে ২০১৯ সালে যে হাওয়া ছিল বিজেপির সেটা এখন নেই বলে মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই বিজেপিকে এখানে খাটতে হবে।