মাদারিহাট বিধানসভার উপনির্বাচনের সময় থেকেই খেলা ঘুরেছিল। সেটা বিজেপি ধরতে পারেনি। আর যখন বুঝতে পারল তখন ওই আসনটি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে চলে গিয়েছে। আর খেলাটা হল, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বারলা। আগামী ২৩ জানুয়ারি আলিপুরদুয়ারের হাসিমারার সুভাষিণী চা–বাগানের মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা তাঁর। কারণ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জন বারলাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই আগামী ২২ জানুয়ারি জলপাইগুড়ির বানারহাটের লক্ষ্মীপাড়া চা–বাগানের বাড়িতে ফিরতে চলেছেন জন বারলা। তবে তাঁর স্ত্রী নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সূত্রের খবর, হাসিমারায় সরকারি অনুষ্ঠান থাকায় ওইদিন তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে নিতে পারছেন না জন বারলা। এই বিষয়ে জন বারলা বলেন, ‘দিদির বেছে দেওয়া দিনেই আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করব। সরকারি অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে সম্মান দেখিয়েছেন তাতে আমি আনন্দিত।’
আরও পড়ুন: হাতি দেখতে গিয়ে বিপত্তি, শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারতেই মৃত্যু বৃদ্ধের, মেদিনীপুরে শোক
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার আসনে বিজেপি জন বারলাকে টিকিট দেয়নি। তখনই তিনি ঠিক করেন বিজেপিকে ভোগাবেন। মূল্য চোকাতে হবে পদ্মশিবিরকে। আর সেটাই করলেন জন বারলা। মাদারিহাট উপনির্বাচনে বিজেপির হয়ে খাটলেন না। উলটে তাঁর অনুগামীদের তৃণমূল কংগ্রেসে ভোট দিতে বলে দেন। আর তারপরই বিজেপির জেতা আসন হাতছাড়া হয় বলে সূত্রের খবর। তার সঙ্গে সঙ্গেই গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকেন বারলা। তাঁকে দলীয় কোনও কর্মসূচিতে দেখাও যায়নি।
চা–বলয়ে জন বারলার একটা বড় জনসংযোগ রয়েছে। আর সেটা জানা সত্ত্বেও তাঁকে লোকসভা নির্বাচনে টিকিট দেয়নি। পাল্টা মাদারিহাট বিধানসভা নির্বাচনে এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রচারেও নামেননি জন বারলা। আর সেই সুযোগটাই নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে জন বারলার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর এটা আগামী কদিনের মধ্যে বাস্তবায়িত হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। এই বিষয়ে জন বারলার বক্তব্য, ‘বিজেপি ডুয়ার্সের আদিবাসীদের সঙ্গে ছলনা করেছে। চা–বাগানে বোনাস চুক্তি ২০ শতাংশ থেকে কমে ১৬ শতাংশ হয়েছে। আমাকে পিছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে। যেখানে সম্মান নেই সেখানে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। আমি মুক্ত বাতাস নিতে চাই। আর সেই পরিবেশ তৃণমূল কংগ্রেসে আছে।’ পাল্টা আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার কথায়, ‘এটা হওয়ারই ছিল। তবে আমাদের সংগঠনের কোনও ক্ষতি হবে না।’