কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠন হয়নি। হতে চলেছে এনডিএ সরকার। যার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বাংলায় বিজেপির ফল খারাপ হয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে বলে গিয়েছিলেন, বাংলা থেকেই এবার সবচেয়ে ভাল ফল হবে। সে ফল কতটা ভাল হয়েছে সেটা এখন দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে শাহজাহান কাঁটা রয়েই গিয়েছে। এতদিন প্রকাশ্যে এসেছিল শেখ শাহজাহান রেশন দুর্নীতিতে জড়িত। এবার আদালতে নথি দিয়ে ইডি দাবি করল, কয়লা পাচারের সঙ্গেও যুক্ত শাহজাহান। এমনকী এই পাচার কাজে দৈনিক প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ‘শাহজাহান–কর’ বাবদ তোলা হতো।
তবে দৈনিক এই টাকা তোলা হলে বছরে তা বিপুল পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায়। এত টাকা কোথায় রেখেছে শাহজাহান? এখন এই প্রশ্ন উঠছে। যদিও এই শাহাজাহান–কর বিষয়টি ইডির প্রাথমিক অনুমান। রেশন দুর্নীতির মামলায় এখন জেলে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর তাঁর গ্রেফতারের কদিন পরেই শাহজাহানের নাম উঠে আসে রেশন দুর্নীতিতে। ইডি সূত্রে খবর, সন্দেশখালি এবং সংলগ্ন এলাকার বহু বাসিন্দার জমি জোর করে দখল করত শাহজাহান। সেখানে বেআইনি ভেড়ি বানিয়ে মাছ চাষের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আসলে মাছ চাষের আড়ালে কালো টাকা সাদা করত শাহজাহান।
আরও পড়ুন: বাংলা থেকে মোদীর মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী কারা? ঘরে–বাইরে চর্চায় উঠে আসছে একাধিক নাম
তবে বাকি যা অভিযোগ রয়েছে সেটা নিয়ে ইডি কিছু বলছে না। নারী নির্যাতন নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছিল তা নিয়ে ইডি বা সিবিআইকে কিছু বলতে শোনা যাচ্ছে না। কারণ ইতিমধ্যেই স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো সামনে এসেছে। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তাতে এখন খানিকটা উৎফুল্ল শাহজাহান। তবে সেই উৎফুল্লতায় এবার ভাটা ফেলতে চলেছে কয়লা পাচার কাণ্ড। কদিন আগে সিবিআই বিশেষ আদালতে শাহজাহান ও তাঁর ভাই আলমগীর–সহ চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, আসানসোল থেকে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লক এবং আরও কিছু এলাকার একাধিক ইটভাটায় নিয়মিত কয়লা পাচার হতো। ২০ থেকে ৩০ টন করে কয়লা আসত। এসবের সঙ্গে যোগ ছিল শাহজাহানের।
এই কয়লা আসা এবং গাড়িতে করে ঢোকা পুরো বিষয়টি নাকি শাহজাহান কন্ট্রোল করত বলে ইডি সূত্রে খবর। এখানেই শেষ নয়, ইডির দেওয়া আদলতকে নতুন তথ্য হল, একটন কয়লার দাম ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। কিন্তু আসানসোল থেকে আসা কয়লা সরবরাহ করার কাজে টন প্রতি অতিরিক্ত ২০০০ টাকা ‘শাহজাহান–কর’ হিসেবে ইটভাটার মালিকদের দিতে হতো। ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আসানসোল থেকে সন্দেশখালিতে দিনে প্রায় ১৫০০ টনেরও বেশি কয়লা পাচার হতো। সেটা হিসেব করলেই বোঝা যাচ্ছে ‘শাহজাহান–কর’ বাবদ দিনে ৩০ লক্ষ টাকা আসত। যদিও এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাহজাহান বলে সূত্রের খবর।