অবৈধভাবে ভারতে ঢুকে বিয়ে। তারপরেই ভয়ঙ্কর ঘটনা। ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। আরও গুরুতর অভিযোগ হল অভিযুক্ত যুবক একজন বাংলাদেশি নাগরিক। আর তার স্ত্রী ভারতীয়। খুনের পরেই পলাতক অভিযুক্ত। নিহত তরুণীর নাম সারজেনা খাতুন (২১)। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ মহকুমার বিপ্রডাঙি গ্রামে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: সামনে লাঠি নিয়ে সোনম, হাতে পোঁটলা, পিছনে রাজা, সামনে মেঘালয় কাণ্ডের ‘শেষ’ ভিডিয়ো
স্থানীয়দের অভিযোগ, সারজেনার স্বামী তথা অভিযুক্তের নাম সানফরাজ আলি। বিয়ের পর থেকেই ওই গ্রামে থাকছিল দু'জনে। জানা গিয়েছে, সারজেনার মা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। সোমবার সকালে মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে ফোনে প্রতিবেশীদের অনুরোধ করেন বাড়িতে খোঁজ নিতে। দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। গ্রামবাসীরা তালা ভেঙে ঢুকতেই চোখে পড়ে ভয়ঙ্কর দৃশ্য। রক্তাক্ত অবস্থায় সারজেনার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন ঘরের মেঝেতে। পিছমোড়া করে বাঁধা, মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল স্পষ্ট।
ঘটনার পর সারজেনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘর থেকেই উদ্ধার হয় অভিযুক্ত সানফরাজের আধার কার্ড। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে যদি সে সত্যিই বাংলাদেশি নাগরিক হয়, তবে কীভাবে ভারতের নথিপত্র বানাল? কীভাবেই বা এতদিন এখানে থেকে গেল? আবার বিয়েও করল?
পুলিশ জানায়, সারজেনার সঙ্গে সানফরাজের পরিচয় হয়েছিল প্রায় দেড় বছর আগে। সানফরাজের আত্মীয়ের বাড়ি রায়গঞ্জের সরিয়াবাদে। সেখান থেকেই বিয়ের প্রস্তাব আসে। বিয়ের পর থেকে বিপ্রডাঙির বাড়িতেই থাকছিলেন তাঁরা।মেয়ের পরিবারের অভিযোগ, সানফরাজ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করত। টাকার জন্য চাপ দিত। কয়েকবার শারীরিক নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে। তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্য জানিয়েছেন, যদি ওই যুবক বাংলাদেশি হয়ে থাকে, তাহলে ভোটার তালিকায় তাঁর নাম থাকার কথা নয়। কিন্তু আধার থাকায় সন্দেহ জোরদার হয়েছে। তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।
রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানান, একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ। পলাতক স্বামীর খোঁজে তল্লাশি চলছে। মৃতার এক আত্মীয় জানান, সানফরাজ বাংলাদেশ থেকেই এসেছে। এখানে দিনমজুরের কাজ করত। তাঁর সঙ্গে বিদেশি লোকেদের যোগাযোগ ছিল বলে সন্দেহ। এমন অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা।