আজ ২২ মার্চ, শীতলা অষ্টমীর পুজো। শীতলা পুজোর সময়, মাতৃদেবীকে ঠান্ডা নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে উপবাসের করে পুজোর সময় ব্রতকথা শুনতে হবে, তবেই উপবাস সম্পূর্ণ হবে।
শীতলা অষ্টমীর ব্রত কথা
কিংবদন্তি অনুসারে, এক গ্রামে এক ব্রাহ্মণ দম্পতি বাস করত। তার দুই ছেলে ছিল এবং দুজনেই বিবাহিত ছিল। দুই পুত্রবধূরই কোনও সন্তান ছিল না। অনেকদিন পর তাদের একটি সন্তান হলো। এর পরে শীতলা সপ্তমীর উৎসব এল এবং এই উপলক্ষে বাড়িতে ঠান্ডা খাবার তৈরি করা হয়েছিল আগের দিন যা হল বাসি খাবার। দুই পুত্রবধূই ভেবেছিলেন যে ঠান্ডা বাসি খাবার খেলে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
শাশুড়ি এবং পুত্রবধূরা উভয়েই শীতলা মার পুজো করলেন এবং ব্রত কথা শুনলেন। পুত্রবধূরা বাচ্চাদের বাসি খাবার খেলে শরীর খারাপ হতে পারে এই অজুহাত দেখিয়ে বাড়িতে এসে গরম খাবার খেতে দিলেন তাঁদের। এরপর শাশুড়ি বাড়িতে এলে তিনি উভয় পুত্রবধূকে খাবার খেতে বললেন এবং খাওয়া দাওয়া মিটলে উভয় পুত্রবধূ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। শাশুড়ি বললেন, বাচ্চারা অনেকক্ষণ ধরে ঘুমাচ্ছে, ওদের জাগিয়ে দাও এবং কিছু খাওয়াও। যখনই তিনি বাচ্চা দুটোকে জাগিয়ে তুলতে গেলেন, দুজনেই অজ্ঞান হয়ে আছে দেখলেন মায়েরা।
দুই পুত্রবধূই কাঁদতে কাঁদতে তাদের শাশুড়িকে পুরো ব্যাপারটা খুলে বলল। শাশুড়ি দুজনকেই ধমক দিয়ে বললেন যে, তোমাদের ছেলেদের জন্য তোমরা মা শীতলাকে অবজ্ঞা করেছ। তোমরা দুজনেই ঘর থেকে বের হও এবং উভয় সন্তানকে জীবিত ও সুস্থ করে তোলার পরই বাড়ি ফিরে আসবে। দুই পুত্রবধূ তাদের বাচ্চাদের ঝুড়িতে ভরে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। পথে তারা একটি শুকনো ক্ষয়প্রাপ্ত গাছের মুখোমুখি হল, যা ছিল একটি খেজুর গাছ। এর নিচে দুই বোন বসেছিল যাদের নাম ছিল ওরি এবং শীতলা।
ওরি এবং শীতলা দুই বোন তাঁদের দুজন কে কাঁদতে কাঁদতে আসতে দেখে কারণ জানতে চাইল। দুজনেই তাদের দুঃখের কথা জানালেন। ইতিমধ্যে কথা বলতে বলতে দুই বোনের মধ্যে শীতলা বলে উঠলেন যে তোমরা দুজনেই দুষ্ট এবং পাপী। শীতলা পুজোর দিন ঠান্ডা খাবার খাওয়ার পরিবর্তে, তোমরা দুজনেই গরম খাবার খেয়েছ।
এই কথা শুনে, দুই পুত্রবধূই শীতলা মাকে চিনতে পারলেন। তারা মায়ের পায়ে পড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে লাগল এবং আর কখনও এমন ভুল করবে না, সেই সংকল্পও করল। পুত্রবধূদের কথা শোনার পর, শীতলা মা তাঁদের প্রতি করুণা বোধ করলেন এবং তাদের সন্তানদের আবার তাঁদের কোলে ফিরিয়ে দিলেন। এই ভাবে ছড়িয়ে পড়ল শীতলা পুজোর মাহাত্ম্য।