যোগী রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে অবহেলার অভিযোগ উঠল। আর এই অবহেলার জন্য একজন পাঁচ বছর বয়সের মেয়ের প্রাণ চলে গেল। কিন্তু কোনও হেলদোল নেই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের। মেয়েটির জ্বর হয়। পরিবারের সদস্যরা তখন মেয়েটিকে নিয়ে এসেছিল সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে অবহেলায় মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের। কারণ, মেয়েটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল তখন চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীরা ক্রিকেট খেলতে ব্যস্ত ছিলেন বলে মারাত্মক অভিযোগ করল মৃত শিশুকন্যার পরিবার। উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ জেলায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। ২৩ অক্টোবর এই ঘটনা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। নিহত মেয়েটির নাম সোফিয়া। বুধবার সোফিয়াকে নিয়ে তার বাবা নাজিম এই সরকারি হাসপাতালে আসেন। ওই সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অরুণ কুমার এই ঘটনা নিয়ে বলেন, ‘নাজিম অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালে কোনও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তিনি হাসপাতালের কর্মীদের জানান মেয়ের জ্বরের কথা। তাঁরা তাঁদের কয়েকটি ঘরে যাওয়ার কথা বলে দেন। কিন্তু সেখানেও কোনও ডাক্তার ছিলেন না।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র দাপটে খোঁজ নিতে বেরলেন ক্লান্তিহীন কান্তি, রায়দিঘি চষে করছেন সতর্ক
সরকারি হাসপাতালে এই অবহেলার অভিযোগের তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সন্তান হারানো পিতা নাজিমের আরও দাবি, একের পর এক ঘরে ঘুরে বেরিয়েছি। কাউকে পাওয়া যায়নি। তাই মেডিকেল কলেজ থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। বাইরে এসে দেখি ডাক্তাররা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার কর্মীরা ক্রিকেট ম্যাচ খেলছেন। তাঁদের কাছে গিয়ে মেয়ের চিকিৎসার জন্য কাকুতি মিনতি করেছিলাম। কিন্তু কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। বরং জানিয়ে দেওয়া হয়, খেলা শেষ হলে দেখা হবে। ততক্ষণে সোফিয়ার মৃত্যু হয়।
এখন মেয়ে সোফিয়াকে হারিয়ে জাস্টিস চাইছেন বাবা নাজিম। কিন্তু কে দেবে তাঁকে জাস্টিস? উঠছে প্রশ্ন। এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে অধ্যক্ষ অরুণ কুমার বেশি কিছু বলতে চাননি। বরং রোগীর চিকিৎসা না করে ডাক্তাররা ক্রিকেট খেলছিলেন এমন অভিযোগ মানতে চাননি তিনি। উলটে ওপিডি’র কোনও চিকিৎসক ক্রিকেট ম্যাচে যোগ দেননি বলে দাবি করেছেন তিনি। অধ্যক্ষ অরুণ কুমারের মতে, ছুটিতে থাকা চিকিৎসকরা সেখানে ক্রিকেট খেলছিলেন। তবে ছুটিতে থাকলেও চিকিৎসকরা ছোট্ট মেয়ে সোফিয়ার চিকিৎসা করলেন না কেন? উঠছে প্রশ্ন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে অধ্যক্ষ আশ্বাস দেন, এই সাংঘাতিক অভিযোগের তদন্ত করা হবে। তদন্তর জন্য তিন চিকিৎসকের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।