দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা বিশেষ নৈশভোজে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসের ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই আমন্ত্রণ পেয়ে মঙ্গলবার নয়াদিল্লি যান অভিষেক। আর সেদিন সন্ধ্যাতেই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে নৈশভোজে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। কিন্তু এবার সেই নৈশভোজ পর্বকে ‘সময় নষ্ট’ বলে কটাক্ষ করল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ ওই নৈশভোজের পরে অভিষেক ঘনিষ্ঠমহলে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বলেই সূত্রের খবর।
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে বিদেশের মাটিতে দেশের হয়ে অভিষেকের ‘সওয়াল’ মন কেড়েছিল ভারতবাসীর। এবার সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরই এই নৈশভোজ পর্ব বিরক্ত লেগেছে। এই নৈশভোজে লোককল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন চত্বরে সাতটি টেবিলের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। সেখানেই বসেছিলেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। অথচ তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, সাংসদ অভিষেক যে টেবিলে বসেছিলেন, সেই টেবিল পর্যন্তই আসেননি প্রধানমন্ত্রী। সারেননি সৌজন্য সাক্ষাৎ। নৈশভোজে মূলত হাসি–মজা ছাড়া গঠনমূলক কিছু হয়নি। নৈশভোজের পরে তাই অভিষেক ঘনিষ্ঠমহলে ‘বিরক্তি’ প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর। যদিও বিজেপি সূত্রে খবর, নানা রাজনৈতিক দলের নেতা–নেত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ‘উষ্ণ’ আদানপ্রদান হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিঘায় প্রথম রথযাত্রা, নবান্নে জরুরি বৈঠকে থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী, মহাসমারোহে পালিত স্নানযাত্রা
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, ওই সাতটি প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সকলকেই মনোনীত করেছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তবে একমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর অনুরোধে তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। আর এই সফর শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজুর দফতর থেকেই ফোন করে অভিষেককে প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে থাকার অনুরোধ করা হয়। তাতে সাড়া দিয়ে অভিষেক নৈশভোজে যান। কিন্তু নৈশভোজ শুধুই ‘সময় নষ্ট’! আর তাই ‘বিরক্ত’ অভিষেক সেখানে এক কাপ চা ছাড়া আর কিছুই খাননি। অপারেশন সিঁদুরের ব্যাখ্যা এবং পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিতে সাতটি দলে ভাগ হয়ে ৫৯ জন নেতা এবং প্রাক্তন কূটনীতিক ৩৩টি দেশ সফর করেন।
তাছাড়া ওই প্রতিনিধিরা দেশে ফিরে কী বললেন আর কী শুনে এলেন, সেটার নির্যাস জানতেই ওই নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা সূত্রের দাবি। যদিও ওই নৈশভোজে যা হয়েছে সেটাতে তৃণমূল কংগ্রেস ‘সন্তুষ্ট’ নয়। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, নৈশভোজে ভোজ এবং হাসি–মশকরা ছাড়া ‘গঠনমূলক’ কিছু হয়নি। বিজেপি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথোপকথন, গুলাম নবি আজাদের পিঠ চাপড়ে একগাল হাসছেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির সমালোচক অঞ্জনা চতুর্বেদীর সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কানিমোঝি মোদীকে একটি দক্ষিণী বস্ত্র উপহার তুলে দেন। কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা, সলমন খুরশিদ, মণীশ তিওয়ারিদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীকে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। তবে ওই ভিডিয়ো’তে অনুপস্থিত অভিষেক।