১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের ভারতে অনুপ্রবেশ সম্পর্কে ভারতীয় সেনাদের সতর্ক করেছিলেন লাদাখি মেষপালক তাশি নামগিয়াল। তিনি সতর্ক না করলে হয়ত অনেক দেরি হয়ে যেত, পাকিস্তানের দখলে চলে যেত লাদাখের কিছু অংশ। ভারতীয় সেনাকে তথ্য দেওয়া সেই মেষপালক প্রয়াত হলেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ভারতীয় সেনার লেহ ভিত্তিক ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কর্পস।
আরও পড়ুন: ৩৫ বছর পর, কার্গিল নায়ক প্রাক্তন মেজর জেনারেলের পুত্র বসলেন পিতার রেখে যাওয়া পদে
এক্স হ্যান্ডেলে ভারতীয় সেনার ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কর্পসের তরফে লেখা হয়েছে, ‘তাশি নামগিয়ালের আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’ সেনাবাহিনী আরও বলেছে, ‘একজন সাহসী দেশপ্রেমিক চলে গেলেন। তিনি শান্তিতে বিশ্রাম করছেন। ১৯৯৯ সালে অপারেশন বিজয়ের সময় জাতির প্রতি তাঁর অমূল্য অবদান রেখে গিয়েছেন। এটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এই শোকের মুহুর্তে আমরা শোকাহত পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা জানাই।’ নামগিয়াল এই বছরের শুরুর দিকে দ্রাসে ২৫ তম কার্গিল বিজয় দিবসে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর মেয়ে সেরিং ডলকার। তিনি একজন শিক্ষক। জানা গিয়েছে, নামগিয়াল লাদাখের আর্য উপত্যকায় অবস্থিত গারখোনে প্রয়াত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি অনুপ্রবেশ সম্পর্কে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক করার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনিই প্রথম ভারতীয় সেনাকে এই কথা জানিয়েছিলেন। এর জন্য পরে তাঁকে সম্মানিত করা হয়েছিল।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালের মে মাসে তাঁর কিছু গরু নিখোঁজ হয়ে যায়। সেগুলি সন্ধান করার সময় নামগিয়াল দেখতে পান বাটালিক পর্বতমালার উপরে পাঠান পোশাকে পাকিস্তানি সৈন্যদের বাঙ্কার খনন করছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে ফিরে এসে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানান। সেই সতর্কতা পেয়েই ভারতীয় সেনা বাহিনী সঙ্গে পাক সেনাকে পালটা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় কার্গিল যুদ্ধ। ১৯৯৯ সালের ৩ মে থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত চলে কার্গিল যুদ্ধ। শ্রীনগর-লেহ হাইওয়ে বিচ্ছিন্ন করার জন্য পাকিস্তানের গোপন মিশনকে ব্যর্থ করে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। নামগিয়ালের দেওয়া তথ্য ভারতের বিজয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল। তাকে বীর মেষপালক হিসাবে স্বীকৃতি দেয় ভারতীয় সেনা।