এয়ারবাস A320 বিমানের জন্য রেকর্ড অর্ডার দিল ইন্ডিগো এয়ারলাইন। সোমবার এই বিশাল অর্ডারের ঘোষণা করেছে সংস্থা। ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইন ইন্ডিগো বর্তমানে দ্রুত হারে সম্প্রসারণের পর্যায়ে রয়েছে। TATA গ্রুপ এভিয়েশন সেক্টরে প্রবেশের পর বাজার ধরে রাখতে দ্রুত হারে ব্যবসা বাড়ানোর চেষ্টা করছে ইন্ডিগো।
প্যারিস এয়ার শো ২০২৩-এ। ছবি: এএনআই
একসঙ্গে ৫০০টি বিমান। এয়ারবাস A320 বিমানের জন্য রেকর্ড অর্ডার দিল ইন্ডিগো এয়ারলাইন। সোমবার এই বিশাল অর্ডারের ঘোষণা করেছে সংস্থা। ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইন ইন্ডিগো বর্তমানে দ্রুত হারে সম্প্রসারণের পর্যায়ে রয়েছে। TATA গ্রুপ এভিয়েশন সেক্টরে প্রবেশের পর বাজার ধরে রাখতে দ্রুত হারে ব্যবসা বাড়ানোর চেষ্টা করছে ইন্ডিগো। ২০২৩ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বাজার শেয়ারের ৫৭.৫% ধরে রেখেছে এই সংস্থা। আরও পড়ুন: শীঘ্রই এয়ার ইন্ডিয়ার রেকর্ড ভেঙে ৫০০ বিমান কিনতে পারে IndiGo
একটি বিবৃতিতে, ইন্ডিগো এয়ারলাইন এয়ারবাসের সঙ্গে এই অর্ডারের বিশদ ব্যাখা করেছে। সংস্থা জানিয়েছে, যেকোনও এয়ারলাইন এই প্রথম একসঙ্গে এতগুলি বিমান কেনার অর্ডার দিয়েছে। ইন্ডিগো জানিয়েছে, ২০৩০ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিমানের ডেলিভারির কথা।
'এই ৫০০টি বিমানের অর্ডার কেবল ইন্ডিগোর বৃহত্তম অর্ডারই নয়, এয়ারবাসেরও যে কোনও এয়ারলাইনের দেওয়া এ যাবতকালের বৃহত্তম বিমানের অর্ডার,' এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে এয়ারলাইন।
ইন্ডিগো CEO পিটার এলবার্স এই চুক্তিকে এয়ারলাইন এবং এয়ারবাসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে উল্লেখ করেছেন। চুক্তির অফিসিয়াল তালিকা মূল্য ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়, প্রকৃত বিক্রয় মূল্য প্রকাশ করা হয়নি।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিবৃতি
এই চুক্তির উল্লেখ করে মঙ্গলবার বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, দেশের অসামরিক বিমান চলাচলের ছবিটাই বদলে দিয়েছে এই অর্ডার। গত নয় বছরে এই সেক্টরে আমূল বৃদ্ধি ঘটেছে। আর তার প্রভাবে শুধু এই সেক্টরের সংস্থাগুলিই নয়, জনগণও উপকৃত হচ্ছেন।
বিমান চলাচলের ইতিহাসে বৃহত্তম ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে ৫০০টি বিমানের বিশাল অর্ডার দিয়েছে ইন্ডিগো এয়ারলাইনস। এয়ারবাসের থেকে A320 neo, A321 neo এবং A321 xlr বিমান কিনেছে ইন্ডিগো।
'২০১৪ সালে ভারতের মোট বিমানের ফ্লিটের চেয়ে বেশি বিমান অর্ডার দিয়েছে IndiGo। বিশ্বের যে কোনও বিমান প্রস্তুতকারকের সঙ্গে কোনও ক্যারিয়ারের অর্ডারের নিরিখে এটি বৃহত্তম। ভারত আরও একটি ল্যান্ডমার্ক স্থাপন করেছে,' বলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। সোমবার প্যারিস এয়ার শোতে এই ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
তিনি আরও বলেন, এয়ারলাইন সেক্টরে ২০১৪ সালে ৪০০টি বিমানের ফ্লিট ছিল। সেখান থেকে প্রায় ৭৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ৭০০টি বিমানের ফ্লিট সাইজে পৌঁছে গিয়েছে।
আরও বাজার দখলের সুযোগ
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে টাটা অধীনস্থ এয়ার ইন্ডিয়া এয়ারবাস এবং বোয়িং কোম্পানির থেকে ৪৭০টি বিমান ক্রয়ের চুক্তি করেছে।
এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হিসাবে টাটা গোষ্ঠী জানিয়েছে, ভারতকে একটি গ্লোবাল কানেক্টিং হাব হিসাবে গড়ে তোলা হবে। কেন্দ্র সরকারও বিমান পরিকাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থ বিনিয়োগ করছে। দেশে বিমানবন্দরের সংখ্যাও দ্রুত হারে বাড়ছে। ২০১৪ সালে দেশে বিমানবন্দরের সংখ্যা ছিল ৭৪টি। সেখান থেকে দ্বিগুণ হয়ে ২০২৩ সালে সেটি বেড়ে ১৪৮-এ পৌঁছে গিয়েছে। ফলে বাজার ধরে রাখতে হলে বিমানের সংখ্যা বাড়ানোটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণেই শ'য়ে শ'য়ে বিমান ক্রয় করতে কোমর বেঁধে নেমেছে অসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থাগুলি।
ইন্ডিগো ২০০৬ সালে ভারতে বিমান পরিষেবা শুরু করে। বর্তমানে তারা ৭৫টিরও বেশি ভারতীয় শহরে, এবং নিকটবর্তী কিছু আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড়ান পরিষেবা প্রদান করে।