'আমি আমার গায়ের রং নিয়ে গর্বিত।' সমাজের বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেরলের মুখ্যসচিব সারদা মুরলীধরন।সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি সমাজে কালো ত্বকের প্রতি পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দিয়েছেন। তার গায়ের রঙকে তার স্বামী তথা কেরলের প্রাক্তন মুখ্যসচিব ভি ভেনুর নেতৃত্বের সঙ্গে তুলনা করা হয়। (আরও পড়ুন: 'সব সদস্য প্রস্তুত', অভ্যুত্থান জল্পনার মাঝে বাংলাদেশি সেনা প্রধানের বড় বার্তা)
২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট কেরলের মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আইএএস অফিসার সারদা মুরলীধরন।কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের মুখ্যসচিব ভি ভেনু অবসর নিতেই সেই আসনে বসেন তাঁর স্ত্রী সারদা মুরলীধরন। একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'গতকাল আমার মুখ্যসচিব হিসেবে নেতৃত্ব নিয়ে একটি মজার মন্তব্য শুনেছি, যে আমার নেতৃত্ব আমার স্বামীর নেতৃত্বের মতো সাদা না হয়ে কালো হয়েছে। এরপরেই স্বামীর সঙ্গে ক্রমাগত তুলনা করা নিয়ে মুখ্যসচিব প্রশ্ন তোলেন, 'কিন্তু কালোকে কেন খারাপ বলা হবে?' তার স্বামীর নেতৃত্ব যেমন সাদা ছিল, তার নেতৃত্ব তেমনই কালো। এই রঙ ভিত্তিক তুলনা সারদাকে গভীরভাবে আঘাত করেছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন কালো রঙকে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়? তিনি বলেন, 'কালোর সঙ্গে কী সমস্যা? আমি কালোকে ভালোবাসি।' (আরও পড়ুন: অসুস্থ চিন্ময় প্রভু, 'হিন্দুদের শিক্ষা দিতে চাইছে?' প্রশ্ন কার্তিক মহারাজের)
সারদা মুরলীধরন তার শৈশবের স্মৃতিচারণ করে বলেন, একসময় তিনি ফর্সা ত্বক নিয়ে পুনর্জন্মের কামনা করতেন। তিনি ভেবেছিলেন, ফর্সা ত্বকই সৌন্দর্য ও গ্রহণযোগ্যতার প্রতীক। কিন্তু তার সন্তানদের নিজেদের গাঢ় ত্বকের প্রতি গর্ব দেখে তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। তিনি লিখেছেন, 'আমার সন্তানরা তাদের কালো ত্বক নিয়ে গর্বিত। এটাই আমাকে বদলে দিয়েছে।' সারদা আরও বলেন, 'আমরা কেন এখনও ত্বকের রঙের ভিত্তিতে মানুষকে বিচার করি? এই ধারণা বদলাতে হবে।' তার কথায় অনেকেই সমর্থন জানিয়েছেন। (আরও পড়ুন: ধর্মীয় মিছিলে পাথর নিক্ষেপ, হিংসা নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন বিপুল সংখ্যক পুলিশ)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কাছে বড় আর্জি মায়ানমারের হিন্দুদের, শুনবেন কি ইউনুস?
কেরলের মুখ্যসচিবের এই পোস্ট ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। অনেকেই তার সাহস ও আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করেছেন। অনেকের কাছে তিনি অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। একজন নেটিজেন লিখেছেন, 'আপনার এই সাহস আমাদের শেখায় যে নিজেকে ভালোবাসতে হবে, যেমনটা আমরা আছি।' আরেকজন লিখেছেন, 'এই ধরনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের সমাজের এই পরিবর্তন দরকার।'