বাংলাদেশে বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলছে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে এই সরকার। কিন্তু এবার প্রশ্ন এই সরকার তো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তৈরি হয়নি। কার্যত ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে কার্যত শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকায় বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠক শেষে ১২ দলের জোটের নেতারা জানিয়েছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ের ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার শপথে অতীতের মতো আগামীতেও বিএনপির সঙ্গে কীভাবে জোট কাজ করবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদন অনুসারে বিষয়টি জানা গিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, একসঙ্গে দীর্ঘ সময় আন্দোলন করেছি।…স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তিনি আরও জানিয়েছেন, যতদিন জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হচ্ছে ততদিন বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না।
১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তাফা জামাল হায়দার জানিয়েছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আগামী দিনে কী করণীয় তা নিয়ে কথা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এখনও ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি।
এদিকে এই একই ইস্য়ুর উপর ভিত্তি করে বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশের সমমনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁদের দাবি, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচনের ধাপ পূরণ করতে হবে। সংস্কারের অজুহাতে নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা মানবেন না বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।
সমমনস্ক দলগুলির সমন্বয়ক ফরিদ উজ জামান ফারহাদ বলেন, সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা হলে। প্রধান উপদেষ্টা এক কথা বলছেন। প্রেস সচিব আরএকটি। আমরা নির্দিষ্ট সময় জানতে চাই। সংস্কারের নামে কালক্ষেপন করা চলবে না। দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে অক্টোবরের প্রথম দিকে বাংলাদেশে কবে ভোট হবে তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। প্রথম আলোতে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে মহম্মদ ইউনুস সেই সময় জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে বসে থাকার লক্ষ্য আমাদের কারোর নেই। তবে সংস্কার করা দরকার। যদি আপনারা বলেন ভোট করুন, আমরা ভোট করার জন্য তৈরি। কিন্তু প্রথমেই ভোটে যাওয়াটা একটা ভুল পদক্ষেপ হয়ে যাবে।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছিল, তিনি জানিয়েছিলেন, একটা ভেঙে পড়া সিস্টেমকে আমরা হাতে পেয়েছি। আগামী দিনে যাতে স্বৈরতন্ত্র ফিরে না আসে সেটা দেখা দরকার। সেকারণেই চেষ্টা চলছে। তিনি জানিয়েছেন, সংস্কার মানে হল অতীতে যা হয়েছে সেটা যেন আর ফিরে না আসে। এরপর তিনি বলেছিলেন, যা খুশি হয় লিখুন।
এদিকে হাসিনার সরকার পড়ে যাওয়ার পরে একাধিক হাসিনা অনুগামী রাজনীতিবিদ, পুলিশ আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এনিয়ে ইউনুস বলেছিলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে যে বিচারপ্রক্রিয়া সেখানে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না। তিনি জানিয়েছেন, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করা হলে ইস্যুগুলি সামনে আসবে।