'বেজিংয়ের অর্থনীতি যে কোনও বহিরাগত আঘাত সহ্য করতে সক্ষম।' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে এমনই মন্তব্য করেছেন চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। সোমবারই চিনা পণ্যের উপর আরও ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুঙ্কার দিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে সব মিলিয়ে চিনা পণ্যে তার হার দাঁড়াবে ১০৪ শতাংশ। কিন্তু তাতে ভয় না পেয়ে পাল্টা মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই হুঁশিয়ারিকে শুল্ক ব্ল্যাকমেইল বলে তোপ দেগে দিয়েছে চিন।
এই আবহে চিনের প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেনকে ফোন করে বেজিংয়ের সঙ্গে নতুন করে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাল্টা শুল্ক নীতিতে চিন খুব একটা বিচলিত বলে জানিয়েছেন লি কিয়াং৷ তিনি বলেন, চিন যে কোন নেতিবাচক বহিরাগত ধাক্কা সম্পূর্ণরূপে কাটিয়ে উঠতে প্রস্তুত। বেজিংয়ের এই পাল্টা শুল্কের প্রভাব সম্পূর্ণরূপে মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত নীতি সরঞ্জাম রয়েছে। চিনের অর্থনীতি বহিরাগত আঘাত সহ্য করতে সক্ষম এবং সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও লি কিয়াং ২০২৫ সালে চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে বলে আশাবাদী।
আরও পড়ুন-China:'শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত!' ট্রাম্পকে ব্ল্যাকমেইল তোপ, পাল্টা হুঁশিয়ারি চিনের
অন্যদিকে, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক মোকাবিলায় ভারতকেও পাশে পেতে চাইছে চিন। চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং বলেন, ‘স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে, এমন একটি ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত চিনা অর্থনীতি। গোটা বিশ্বের ওপর আমাদের অর্থনীতি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ক্রমাগত আপগ্রেডেড শিল্প ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে চিনা উৎপাদন। গবেষণা, দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের উপর একটি শক্তিশালী ফোকাসের উপর নির্মিত আমাদের অর্থনীতি। অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন এবং বহুপাক্ষিকতার দৃঢ় সমর্থক চিন। এই বহুপাক্ষিকতাই বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্তিশালী প্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা রক্ষার জন্য বাকি বিশ্বের সাথে কাজ চালিয়ে যাব।'
আরও পড়ুন-China:'শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত!' ট্রাম্পকে ব্ল্যাকমেইল তোপ, পাল্টা হুঁশিয়ারি চিনের
এর আগে চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায়, 'এটি একের পর এক ভুলের ধারাবাহিকতা, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাকমেইলিং মনোভাবকেই সামনে আনে। যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করে, তবে চিন তাদের অধিকার রক্ষায় শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।' সোমবার চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেলি-র একটি মন্তব্যে বলা হয়েছে, চিন আর কোনও চুক্তির মায়াতে আঁকড়ে নেই। যদিও ভবিষ্যতের আলোচনার জন্য একটি ছোট জানালা খোলা রেখেছে। ২ এপ্রিল ভারত, চিন-সহ একাধিক দেশের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে চিনও মার্কিন পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছিল। তারপর চিনকে মার্কিন আমদানির উপর ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক ঘোষণা বাতিল করার জন্য একদিন সময় দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, সময়সীমা পূরণ না হলে ৯ এপ্রিল থেকে চিনের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে।