বাংলাদেশ সেনার পাঁচ উচ্চপদস্থ কর্তাকে গৃহবন্দি করার দাবি করা হল রিপোর্টে। গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্র বিদ্রোহের সময় এই পাঁচ সেনা কর্তার 'নেতিবাচক' ভূমিকা ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে। নবভারত টাইমস এবং নর্থ ইস্ট নিউজ তাদের প্রতিবেদনে এই দাবি জানিয়েছে। যদিও বা বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বর্তমানে রুশ সফরে আছেন। রাশিয়া আবার ভারতের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। এদিকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বড় ভূমিকা পালন করেছিল রুশ নৌবাহিনী। এমন এক সময় বাংলাদেশ সেনার পাঁচ কর্তার বিরুদ্ধে ইউনুসের পদক্ষেপের এই খবর শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ঢাকা সেনানিবাসে গৃহবন্দি আছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পাঁচজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যে দু'জন ব্রিগেডিয়ার, একজন কর্নেল, একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং একজন মেজর রয়েছেন। ৫ এপ্রিল থেকে এই সামরিক কর্মকর্তাদের তাঁদের সরকারি বাসভবনে আটক করে রাখা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। এই পাঁচ সেনাকর্তা আবার হাসিনা ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বলে দাবি করা হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আটক হওয়া এই পাঁচ সেনা কর্মকর্তার পরিচয় প্রকাশ করেনি।
তবে নবভারত টাইমসের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গৃহবন্দি থাকা এই পাঁচজন হলেন - ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম জাকারিয়া হুসেন (ইঞ্জিনিয়ারস ব্রিগেড), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরান হামিদ (ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড; জেনারেল হামিদ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও এডিসি ছিলেন), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কর্নেল আবদুল্লাহ আল-মোমেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহম্মদ রিদওয়ানুল ইসলাম এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর মহম্মদ নোমান আল ফারুক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই সমস্ত কর্মকর্তাদের ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখা হয়েছে এবং তাদের সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের গতিবিধি সীমাবগ্ধ করা হয়েছে এবং তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই পাঁচ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান এই পদক্ষেপের অনুমোদন দিয়েছেন। এর আগে অবশ্য প্রমাণ ছাড়া এই পাঁচ কর্তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপে সায় ছিল না ওয়াকারের। উল্লেখ্য, ছাত্র আন্দোলনের সময় সেনা প্রধান ওয়াকার নিজে হাসিনার নির্দেশ 'অমান্য' করেছিলেন। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সেনা নামাতে দেননি ওয়াকার।
প্রসঙ্গত, এর আগে বাংলাদেশ সেনায় অভ্যুত্থানের জল্পনা শোন যাচ্ছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। এদিকে হাসিনা বিরোধী অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র নেতা হাসনাত আবদুল্লা সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, সেনা প্রধান নাকি আওয়ামি লিগকে ফেরাতে চান বাংলাদেশের রাজনীতিতে। যদিও সেই সময় হাসনাতের 'সহযোদ্ধা' সারজিস আলম আবার সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা এবং বিতর্ক হয়েছিল। এরই মাঝে এবার ছাত্র আন্দোলনে পাঁচ সেনা কর্তার ভূমিকার ইস্যু উঠে এসেছে সেই দেশে।