কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) কাজে লাগিয়ে ডেলিভারি এবং গুদাম ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে অ্যামাজন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ই-কমার্স জায়ান্ট জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পণ্য সরবরাহ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, দক্ষ ও পরিবেশবান্ধব করা হচ্ছে।এমনটাই দাবি করা হয়েছে রয়টার্সের এক রিপোর্টে। (আরও পড়ুন: মুখে পরমাণু যুদ্ধের কথা বলা পাকিস্তানের ৪৫% দরিদ্র, ১৬% অতিদরিদ্র: বিশ্বব্যাঙ্ক)
আরও পড়ুন: কাশ্মীর পেল ২ জোড়া বন্দে ভারত, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেল সেতু দিয়ে যেতে কত খরচ?
অ্যামাজন জানিয়েছে, তারা তাদের ‘ল্যাব ১২৬’ ডিভাইস ইউনিটে একটি নতুন দল গঠন করছে, যারা উন্নত রোবট তৈরি করবে। এই রোবটগুলি থাকবে মাল্টি-টাস্কিং এআই ক্ষমতাসম্পন্ন, যা শুধু একক কাজ নয়, বরং ব্যবহারকারীর নির্দেশ অনুযায়ী একাধিক কাজ একসঙ্গে সম্পন্ন করতে পারবে। সংস্থার রোবোটিকস বিজ্ঞানী এবং ল্যাব ১২৬ ইউনিটের প্রধান ইয়েশ দত্তাত্রেয়া বলেন, ‘আমাদের গ্রাহকদের জন্য এর মানে হল আরও দ্রুত ডেলিভারি।’ তিনি আরও জানান, ছুটির মৌসুমে যখন চাহিদা বেড়ে যায়, তখন এই রোবটগুলি ট্রেলার আনলোডিং (পণ্য ওঠানো–নামানো) থেকে শুরু করে সংস্কারের জন্য যন্ত্রাংশ সংগ্রহ-সবই করতে পারবে, এমনকি সংকীর্ণ জায়গায় ভারী বস্তু তোলার কাজেও পারদর্শী হবে। (আরও পড়ুন: আইফেল টাওয়ার থেকে ৩৫ মিটার উঁচু,মোদীর উদ্বোধন করা চেনাব সেতুতে আছে কলকাতার ছোঁয়া)
আরও পড়ুন-'পাকিস্তানের আসল উদ্দেশ্য...,' সাংবাদিক পুত্রের প্রশ্নে মোক্ষম জবাব শশীর
এই ‘এজেন্টিক এআই’ প্রযুক্তি বর্তমানে প্রযুক্তি খাতে অন্যতম বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এতে সফটওয়্যার নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং ব্যবহারকারীর বাড়তি নির্দেশনা ছাড়াই কাজ সম্পন্ন করতে পারে।অ্যামাজন জানিয়েছে, ‘আমরা এমন সিস্টেম তৈরি করছি, যা শুনতে, বুঝতে এবং প্রাকৃতিক ভাষায় নির্দেশনা পেয়ে কাজ করতে পারে-ফলে গুদামের রোবটগুলি হয়ে উঠছে আরও দক্ষ ও বহুমুখী সহকারী।’তবে রোবটের ডিজাইন, সংখ্যা বা কবে এই রোবট মোতায়েন হবে-এসব বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান দত্তাত্রেয়া। (আরও পড়ুন: অপারেশন ব্লু স্টারের বর্ষপূর্তিতে 'খলিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান স্বর্ণমন্দিরে)
আরও পড়ুন: রেপো রেট কমানোর হ্যাটট্রিক RBI-এর, সঙ্গে ক্যাশ রিজার্ভ রেশিওতেও কাটছাঁট
এআই শুধু গুদামে নয়, পণ্য ডেলিভারিতেও সাহায্য করবে। অ্যামাজন জানিয়েছে, তাদের ডেলিভারিম্যানদের জন্য তৈরি হচ্ছে আরও উন্নত মানচিত্র। এই মানচিত্রে থাকবে বিল্ডিংয়ের কাঠামো, বাধা কিংবা অন্যান্য জটিল তথ্য, যা চালকদের দ্রুত ও সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে।সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিশাল অফিস কমপ্লেক্সের মতো জটিল জায়গায় সঠিক ডেলিভারি পয়েন্ট খুঁজে পেতে এই প্রযুক্তি চালকদের জন্য সহায়ক হচ্ছে।’ রয়টার্সের এক পুরনো প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, এই ম্যাপিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে চালকদের জন্য বিশেষ চশমা তৈরির কাজ করছে আমাজন, যেখানে থাকবে ইন-বিল্ট স্ক্রিন। এতে জিপিএস ডিভাইস হাতে না নিয়েও নির্দেশনা পাওয়া যাবে। এখন জানা গেল, চালকদের জন্য নির্মিত সেই চশমার প্রকল্প এবার প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করল অ্যামাজন।
আরও পড়ুন-'পাকিস্তানের আসল উদ্দেশ্য...,' সাংবাদিক পুত্রের প্রশ্নে মোক্ষম জবাব শশীর
এছাড়া, পণ্যের চাহিদা কোথায় বেশি হবে, কী ধরনের পণ্য বেশি বিক্রি হবে-এসব পূর্বাভাস দিতে এআই ব্যবহার করছে অ্যামাজন। এতে করে দ্রুত ও একইদিনে ডেলিভারি দিতে পারছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি এআই বিবেচনা করছে মূল্য, স্বাচ্ছন্দ্য, আবহাওয়া ও ‘প্রাইম ডে’র মতো বিক্রির মৌসুমও।অ্যামাজনের সাপ্লাই চেইন অপটিমাইজেশন টেকনোলজিস ইউনিটের পরিচালক নাথান স্মিথ বলেন, ‘এর ফলে আমরা বোস্টনে একধরনের বই বিক্রি করতে পারি, আবার বোইজে শহরে ভিন্ন ধরনের-যাতে স্থানীয় মানুষের রুচি অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।’ এআই ব্যবহারের ফলে শুধু দ্রুত ডেলিভারিই নয়, বরং পণ্যের অপচয় রোধ এবং কার্বন নিঃসরণ কমাতেও বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে আমাজন।