টানা ৪৫ দিনের মহাকুম্ভ শেষ হল বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫)। আর এদিনই ছিল মহাশিবরাত্রির ষষ্ঠ এবং সর্বশেষ পুণ্যস্নানের উৎসব।
প্রশাসনের হিসাব বলছে, এবারের এই আয়োজনে মেলাপ্রাঙ্গণে এসেছেন অন্তত ৬৬ কোটি মানুষ! বুধবার, মহাকুম্ভের শেষ দিনের পরিসংখ্যান অনুসারে, শুধুমাত্র এদিনই সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নান করেছেন অন্তত ১ কোটি ৪৪ লক্ষ পুণ্যার্থী!
এদিন বিকেলে মহাকুম্ভের সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভারতীয় বায়ুসেনার তরফ থেকে সঙ্গমের আকাশে একটি বিশেষ 'ফ্লাইপাস্ট' উপস্থাপিত করা হয়। যা মহাকুম্ভের সমাপ্তি লগ্নে এক অনন্য মাত্রা যোগ করে।
এবারের এই আয়োজনের সূচনা হয়েছিল গত ১৩ জানুয়ারি পৌষ পূর্ণিমার স্নানের মধ্য দিয়ে। মহাকুম্ভ শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমান ছিল, এবার সেখানে অন্তত ৪৫ কোটি মানুষের সমাগম হবে। কিন্তু, বাস্তব সংখ্যাটা সেই অনুমান ছাপিয়ে গিয়েছে বলেই দাবি সরকার পক্ষের। দাবি আরও করা হচ্ছে, কুম্ভের ইতিহাসে এবারের জমায়েতই ছিল সর্ববৃহৎ।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি, বিশ্বের নানা দেশ থেকেও ভক্ত ও দর্শনার্থীরা এবারের মহাকুম্ভে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে হিন্দু ধর্ম মতে দীক্ষালাভও করেছেন।
মহাকুম্ভের শেষ দিনেও একেবারে কাকভোর থেকে পুণ্যস্নান করার জন্য মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পুণ্যস্নানের জন্য শুভ মহরৎ শুরু হয়েছে এদিন সকাল ৯টা বেজে ১৯ মিনিটে এবং তা বজায় থাকবে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা বেজে ০৯ মিনিট পর্যন্ত।
প্রশাসনিক সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বুধবার ভোররাত ২টো থেকেই পুণ্যস্নান করতে শুরু করে দেন পুণ্যার্থীরা। দুপুর ১২টা বাজতে বাজতে জলে ডুব দেওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয় ১.০১ কোটি! আর সন্ধে ৬টা পর্যন্ত তা আরও বেড়ে হয় ১.৪৪ কোটি!
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, মহাকুম্ভ চলাকালীন মোট ছ'টি প্রধান পুণ্যস্নানের উৎসব পালন করা হয়। সেই সময় সব মিলিয়ে পুণ্যার্থীদের উপর মোট ১২০ কুইন্ট্যাল গোলাপের পাপড়ির বর্ষণ করা হয়। যার মধ্যে তিনটি অমৃত স্নানও ছিল।
এগুলি হল - ১৪ জানুয়ারির মকর সংক্রান্তির স্নান, ২৯ জানুয়ারির মৌনি অমাবস্যার স্নান এবং ৩ ফেব্রুয়ারির বসন্ত পঞ্চমীর স্নান। এই তিনটি স্নান উৎসবের প্রত্যেকটিতে ২০ কুইন্ট্যাল করে গোলাপের পাপড়ি বর্ষণ করা হয়।
মহাকুম্ভ নগরের জেলাশাসক বিজয় কিরণ আনন্দ জানিয়েছেন, মহাশিবরাত্রির ষষ্ঠ এবং সর্বশেষ স্নান উৎসবের মধ্য দিয়েই বুধবার মহাকুম্ভ অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে এবং নির্বিঘ্নে সমাপ্ত হয়েছে।
যদিও শুভ মহরৎ চলবে বৃহস্পতিবার সকাল প্রায় ৮টা পর্যন্ত। মনে করা হচ্ছে পুণ্য়ার্থীরাও ততক্ষণ মেলাপ্রাঙ্গণে থাকবেন এবং সমস্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনাও ততক্ষণ বজায় রাখা হবে।