স্বাস্থ্যখাতে যতই উন্নতি হোক, ওষুধের যতই ভ্যারাইটি আসুক, আয়ু বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমে যাচ্ছে। তাই অমরত্ব তো দূরে থাক, শতায়ু হওয়ার সম্ভাবনাও খুব বেশি নেই আমআদমির। তাই বিজ্ঞানে কোনও যুগান্তকারী ব্রেক থ্রু না এলে, আয়ুর উচ্চসীমাতে মানুষ মোটামুটি পৌঁছে গিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গত কয়েক দশকে আয়ু বৃদ্ধির হার কমে গিয়েছে। আজকের শিশুদের ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম। দশটি দেশে গত ৩০ বছরের জীবনকালের ডেটা দেখে এই গবেষণা করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, হংকং, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং আমেরিকাকে নিয়ে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে নেচার জার্নালে।
আরও পড়ুন: (Breast Cancer: ৫৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মহিলারা ভুগছেন স্তন ক্যানসারে, কোন রাজ্যে বিপদ বেশি)
১৯৯০ থেকে ২০১৯ সালের ডেটা অনুযায়ী, রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে এই দেশগুলিতে ২০১৯ সালে জন্ম নেওয়া মেয়েদের ১০০ বছর বয়সে পৌঁছোনোর সম্ভাবনা রয়েছে মাত্র ৫.১ শতাংশ, যেখানে ছেলেদের সম্ভাবনা মাত্র ১.৮ শতাংশ। ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় শিকাগোর মহামারী বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণার সহ-লেখক এস জে ওলশানস্কি সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে বিংশ শতকে স্বাস্থ্যের উন্নতি হলেও, প্রতি দশকে প্রায় তিন বছর আয়ু বৃদ্ধি হলেও, এই উন্নতির হার যথেষ্ট নয়।
গবেষকরা আরও দেখেছেন যে ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের তুলনায় গত দশকে আয়ু বৃদ্ধির হার কমে গিয়েছে। যদিও মানুষ এখনও বেশি দিন বেঁচে থাকে, তবে এই বৃদ্ধি ততটা উল্লেখযোগ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, হংকং এবং দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া প্রায় প্রত্যেক দেশের পরিসংখ্যান আশানুরূপ নয়। প্রতি দশকে প্রায় দুই বছর করেও আয়ু বৃদ্ধি হচ্ছে না। ওলশানস্কি এদিন আরও দাবি করেছেন যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন রোগের দেখা মিলছে। এই রোগগুলি আমাদের কোষ, টিস্যু এবং অঙ্গগুলিকে বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা এড়ানো সম্ভব নয়। এর কারণ হল, আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের শরীর এখনও সেভাবে খাপ খাওয়াতে পারেনি। ফলে অনেকদিন বাঁচলেও অনেকে সেভাবে ভালো ভাবে বাঁচতে পারছেন না, কোয়ালিটি অফ লাইফ বেশ খারাপ থাকছে।
আরও পড়ুন: (Karwa Chauth 2024: আপনি কি ডায়াবেটিক রোগী? তাহলে করওয়া চৌথ চলাকালীন মেনে চলুন এই নিয়মগুলি)
জীবনযাত্রার পরিবর্তন কি আয়ু বাড়াতে পারে
একটি সাক্ষাৎকারে, এ প্রসঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছিলেন যে ওজন কমানো, ধূমপান ছেড়ে দেওয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার চিকিৎসা, অবশ্যই উল্লেখযোগ্যভাবে আয়ু বৃদ্ধি করতে পারে না। কিন্তু জীবনযাত্রায় নিম্নলিখিত স্বাস্থ্যকর পরিবর্তনগুলি সুস্থ জীবন দিতে পারে।
- অতিরিক্ত ওজন হ্রাস
- ধূমপান ত্যাগ করা
- সূর্যের আলোয় খুব বেশি না যাওয়া
- ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন না হওয়া
যদিও জীবনযাপনে এই পরিবর্তনগুলি উপকারি, বাস্তব জীবনে এগুলো মেনে চলা কিন্তু বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে।