লক্ষ্মীর ভাঁড়, বিপদের সময় যেটি সকলের সব থেকে বড় ভরসা, যে আমাদের সব স্বপ্ন পূরণ করার একটা অন্য রাস্তা, সেই লক্ষ্মীর ভাঁড় হল বহু মানুষের কাছে নস্টালজিয়া। আধুনিকতার তালে তাল মেলাতে গিয়ে কিছুটা হলেও হারিয়ে গেছে ভাঁড়ে টাকা জমানোর রীতি, কিন্তু আজও গ্রাম বাংলায় দেখতে পাওয়া যায় মাটির ভাঁড়ের ব্যবহার।
মাটির ভাঁড় মূলত দেখতে পাওয়া যায় কুমোর পাড়া সংলগ্ন হাটে। এই হাটেই বিভিন্ন আকৃতির এবং বিভিন্ন ডিজাইনের মাটির ভাঁড় কিনতে পারবেন আপনি। এই ভাঁড় ছিল ৯০ দশকের মানুষের ছোট ব্যাঙ্ক, যেটি মূলত ব্যবহার করতেন বাড়ির মা কাকিমারা। খুচরো টাকা হাতে এলেই সেটি চলে যেত যথাস্থানে, বিপদে বা প্রয়োজনে সেটাই কিন্তু হত বড় সম্বল।
(আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুজোর ভোগে সবজি দিয়ে বানিয়ে নিন এই স্পেশাল খিচুড়ি, রইল রেসিপি)
মাটির ভাঁড়ের চাহিদা এখন কতটা জানাতে গিয়ে কুমোর পাড়ার এক ব্যক্তি জানান, সত্যি মাটির ভাঁড়ের চাহিদা অনেক কমে গেছে আগে থেকে। তবে গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে এখনও এর চাহিদা আছে অনেকটাই। তবে আগের থেকে এখন কম পরিমাণে তৈরি করতে হয় মাটির ভাঁড়।
ভাঁড় বিক্রেতাদের মতে, এখন আর খুচরো পয়সা জমানোর জন্য এটি ব্যবহার করা হয় না। বরং এখন টাকা জমানোর জন্যই এটি ব্যবহার করা হয়। যদিও অনলাইন দেনা পাওনার বাজারে এখন খুব কমই ব্যবহার করা হয় এই মাটির ভাঁড়। মানুষের কাছে এখন সবকিছুই সহজলভ্য তাই তিলে তিলে টাকা জমানোর সেই আনন্দ থেকে এখন বেশ দূরেই থাকেন মানুষ।
(আরও পড়ুন: টমেটো-খেজুরের চাটনি তো খেলেন, লক্ষ্মীপুজোয় বানান নারকেলের চাটনি! রইল রেসিপি)
তিনি আরও জানান, এখন এই জিনিসটি বেশিরভাগ ব্যবহার করেন গ্রামের মানুষ এবং চা বাগান এলাকার শ্রমিকরা। এক কথায় বলতে গেলে, যাদের কাছে এখনও প্রযুক্তি সেই ভাবে গিয়ে পৌঁছয়নি তারাই এখনও এই নস্টালজিয়ায় নিজেকে আটকে রেখেছে। শহরের দিকে বেশিরভাগ মানুষ বা শিশুরা প্লাস্টিকের বিভিন্ন কার্টুনের পিগি ব্যাঙ্ক ব্যবহার করে টাকা জমানোর জন্য। সেগুলি থেকে যেমন সহজে টাকা রাখা যায় আবার যখন খুশি ইচ্ছে বের করে নেওয়া যায়, যেটা করা যায় না মাটির ভাঁড়ে।