দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর, আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে এখন জনসমক্ষে কম দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যেই খবর যে মঙ্গলবার থেকে তিনি ১০ দিনের বিপাসনার জন্য পাঞ্জাব যাবেন। জানা গিয়েছে তিনি আজ হোশিয়ারপুরে একটি ধ্যান শিবিরের জন্য রওনা হবেন। ৫ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত সেখানকার একটি কেন্দ্রে বিপাসনা ধ্যানে যোগ দেবেন।
তবে জানেন কি? এটাই প্রথমবার নয়, এর আগেও তিনি এই বিপাসনায় অংশগ্রহণ করছেন। এর আগে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৩ বার বিপাসনা করেছেন। কিন্তু এখন নিশ্চয়ই মনে প্রশ্ন জাগছে যে এই বিপাসনা কী? এতে কী করা হয়? সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আরও পড়ুন: বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে প্রধান মন্ত্রীর গির সাফারি! 'অমূল্য সম্পদ…', বিশেষ বার্তা সচিনের
বিপাসনা ধ্যান কী?
বিপাসনা একটি প্রাচীন ধ্যান কৌশল, যা গৌতম বুদ্ধ ২৫০০ বছর আগে তৈরি করেছিলেন। অর্থাৎ, এটি বৌদ্ধধর্মের প্রাচীনতম ধ্যান পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি। এই ধ্যান আত্ম-পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে তৈরি। যেখানে একজন ব্যক্তি তাঁর শারীরিক সমস্যাগুলি সাবধানের জন্য পর্যবেক্ষণ করেন, পাশাপাশি মানসিক সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা করেন। সহজ ভাষায়, বিপাসনা ধ্যান মনকে শুদ্ধ করতে, মানসিক শান্তি অর্জন করতে এবং আত্ম-সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
বিপাসনা ধ্যানের কোর্স সাধারণত ১০ দিনের জন্য হয়। এখানে অংশগ্রহণকারীদের কিছু কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হয়। এই সাধনা কোনও ধর্ম, সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এটিকে বৈজ্ঞানিক ভাবে মানসিক ও শারীরিক শুদ্ধির একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়।
আরও পড়ুন: ২৫ বছর পেরোলেই খাওয়া উচিত এই ৫ ফল, স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি
বিপাসনা কোর্সে যোগদানের পর কিছু কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হবে। জেনে নিন সেগুলি কী কী।
১) বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে না
বিপাসনা ধ্যান শিবিরে মোবাইল, বই, নোটবুক বা অন্য কোনও বিনোদনের সামগ্রী ব্যবহার করতে পারবেন না। এমনকী নিজের কাছে রাখাও যাবে না। তা যদি থাকে, তবে ক্যাম্পে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই জমা করতে হবে। অর্থাৎ ১০ দিনের জন্য বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হবে।
২) পরম নীরবতা
ধ্যানের সময় পুরো ১০ দিন নীরব থাকতে হবে। অর্থাৎ কারও সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমেই সবটা বোঝাতে হবে।
৩) সরল জীবন
ধ্যানের সময় একটা নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলতে হবে। যেমন ভোর ৪ টে ঘুম থেকে ওঠা, ধ্যান করা, সাত্ত্বিক খাবার খাওয়া, ব্রহ্মচর্য পালন করা, রাত ৮টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়া ইত্যাদি।
বিপাসনার উপকারিতা
মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমায়: বিপাসনা মানসিক অস্থিরতা দূর করে, মনকে স্থিতিশীল ও শান্ত করে। অর্থাৎ, এটি চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
মনোযোগ বৃদ্ধি: এটি মনোযোগ বৃদ্ধি করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা উন্নত করে। অর্থাৎ যে কোনও জিনিস আরও ভালো ভাবে বোঝা যায়।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ: বিপাসনা শেখায় কীভাবে দুঃখ, রাগ এবং ভয়ের মতো নেতিবাচক আবেগ মনের মধ্যে তৈরি হলেও নিজেকে শান্ত রাখা যায়।
স্বাস্থ্য ভালো রাখে: এসবের পাশাপাশি, বিপাসনা স্বাস্থ্যের উপরও খুব ভালো প্রভাব ফেলে। এতে ভালো জীবনধারা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং সময় মতো ঘুমানো শরীরে অনেক ভালো পরিবর্তন আনে।