আর জি করের ঘটনায় চারিদিকে প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। আম জনতাদের পাশাপাশি নাগরিক হিসাবে এই প্রতিবাদ মিছিলে সামিল টলিপাড়া। রবিবার, ১লা সেপ্টেম্বর ‘আমরা তিলোত্তমা’র ডাকে কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহামিছিলেও টলিপাড়ার স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান চোখে পড়ার মতো।
আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রথমদিন থেকেই সোচ্চার হয়েছেন জিতু কমল। এদিন ফেসবুকে ‘ধান্দাবাজ’-এর চিহ্নিত করার আবেদন রাখলেন অভিনেতা। একইসঙ্গে অভিনেতা তোপ দাগলেন, ‘ফেসবুকি সিপিএম’দের উদ্দেশে। জিতু নিজে বামমনস্ক। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর অন্ধ অনুগামী। এদিন জিতু ফেসবুকে লিখলেন, ‘বলি,আজকের যে মহামিছিলে এত সংখ্যক মানুষের সমাগম,এই মিছিলটা কোন রাজনৈতিক দলের?? প্রথম দিন যখন আমি বলেছিলাম দলমত নির্বিশেষে রাস্তায় নামুন।তখন কিছু ফেসবুকি সিপিএম ঝাঁপিয়ে পড়ে সমালোচনা করলেন। আজকে তো আবার দেখিয়ে দিলো শহরবাসী,পশ্চিমবাংলাবাসী।’
এরপর গেরুয়া শিবিরকে এতহাত নিয়ে তিনি লেখেন, ‘দলমত নির্বিশেষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন। টিএমসি, সিপিআইএম দেখতে যাবেন না।অবশ্যই ধান্দাবাজদের চিহ্নিত করুন। (যারা মমতা দেবীরও নয়, বিমান বাবুরও নয়, মোদীজীরও নয়। যেদিকে ভিড় সেদিকে ঝুঁকে পড়েন,আর নিজেরটা গুছিয়ে নেন) বাকি একটা দল তো রুটি সেঁকছে।’
জিতুর এই পোস্ট দেখে মর্মাহত এক বাম সমর্থক। তিনি লেখেন,'দয়া করে কোন লড়াইকে ছোট করবেন না। আজকের মিছিল সফল হোক। আর সিপিআইএম দলীয়ভাবে ওই একই জায়গা থেকে পরশুদিন মিছিল করবে। সেটাও সফল হোক।' জিতু নিজের মন্তব্য স্পষ্ট করে ফের জানান, ‘ছোট কাকে করতে দেখলেন?? ছোট হয়েছিল তারা, যারা রাজনীতিকে বাইরে রেখে অন্যায় এর বিরুদ্ধে কথা বলতে চাইলেন। তাদেরকে কিছু মানুষ কটাক্ষ করে ঘরে বসিয়ে দেওয়া হলো’।
রাজনৈতিকভাবে যারা সচেতন নয় তাদেরকে কটাক্ষ করে লাভ নেই। তাদের মত করে তারা প্রতিবাদটুকু করুক, এমনটাই চান জিতু। এদিন তসলিমা নাসরিনের ‘মিছিল’ কবিতাও পাঠ করে শোনান পর্দার সত্যজিৎ রায়।
তসলিমার এই কবিতা ভীষণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে জিতুকে। লেখিকা নিজেও একটা সময় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। মনে করিয়ে দিয়েছেন জিতু। তসলিমার লেখনী রীতিমতো শিহরণ জাগায়।
তিনি লিখেছেন, ‘চতুর্দিকে মানুষ এখন ক্ষেপে গেছে, যখন-তখন সবাই তাঁরা এখন মিছিল করে….. মৃত্যু দিতে এতটুকু প্রাণ কাঁপে না। তবু কেন ফুল ফোটে না?’ কিন্তু বিচার মিলবে? ২৩ দিন পরেও উত্তর অধরা।