আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে একদফায়। তার প্রাক্কালে শুক্রবার থেকে নানা জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিতে শুরু করেছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে। আদালতের নির্দেশ থাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে ‘রিক্যুইজিশন’ পাঠায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারপরই আগমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর ঠিক তখনই বাংলায় আসা এই আধাসেনা জওয়ানদের ভরণপোষণ–যাতায়াত এমনকী যাবতীয় লজিস্টিকাল সাপোর্টের জন্য নয়াদিল্লির কাছে খরচ চাইল রাজ্য পুলিশ।
এদিকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে দাবি করেছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনার পর আরও ১৫ দিন এই রাজ্যে থাকুক কেন্দ্রীয় বাহিনী। যাতে ভোট পরবর্তী হিংসা না হয়। সুতরাং পঞ্চায়েত নির্বাচনে পরোক্ষে পরাজয় তিনি মেনেই নিলেন। এই দাবির প্রেক্ষিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী বলেছে সেটা প্রকাশ্যে কেউ জানাননি। একবারে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাল না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য ১৫০ কোটি টাকার হিসেব পাঠানো হয়েছে নয়াদিল্লিকে। আর পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটলে মোট খরচের হিসেব কষে বাকি টাকা চাওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এই সংক্রান্ত নথি পাঠানো হয়েছে। তারা সেই নথি সম্বলিত চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু খরচ কি আসবে? উঠছে প্রশ্ন। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বহু টাকাই এখনও বাকি। যা রাজ্য সরকার পায়নি বলে অভিযোগ। সেখানে এই বিপুল পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ এখনই পাঠায় কিনা সেটাই দেখার।
আর কী জানা যাচ্ছে? কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বাহিনী বাবদ কোনও খরচ রাজ্যকে বহন করতে হবে না। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকা–খাওয়া থেকে শুরু করে যাতায়াতের জন্য গাড়ি–সহ সব ব্যবস্থা রাজ্য পুলিশকেই করতে হচ্ছে। প্রত্যেক জেলায় স্কুলবাড়ি, হোটেল বা গেস্ট হাউস ভাড়া নিতে হচ্ছে রাজ্য পুলিশকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য। সেই বিলও মেটাতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারির জন্য দু’হাজারের বেশি গাড়ি ভাড়ায় নিতে হচ্ছে। সঙ্গে আছে জ্বালানির খরচ। এসব কাজের জন্য এখনই অনেক টাকা প্রয়োজন। তাই আগাম অর্থের আবেদন করা হয়েছে। এই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে ২০০ কোটির বেশি টাকা দরকার।