শুভব্রত মুখার্জি: এই মুহূর্তে ক্রিকেট দুনিয়ার বেশ জনপ্রিয় নাম সূর্যকুমার যাদবের। জুন মাসেই জিতেছেন টি-২০ বিশ্বকাপ। এর কয়েক দিনের ব্যবধানেই ভারতীয় টি-২০ দলের অধিনায়ক হিসাবেও ঘোষণা করা হয়েছে তাঁর নাম। খ্যাতির চূড়ায় এই মুহূর্তে অবস্থান করছেন বলা যায় সূর্যকুমার যাদব। আর তাঁর গুরু অর্থাৎ ছোটবেলার কোচকে সম্প্রতি চরম অপমান, হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে! অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে তাঁর সঙ্গে। এখানেই শেষ নয় ২৪ বছর পরে চলে গিয়েছে তাঁর চাকরিও। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, সূর্যর ছোটবেলার কোচ অশোক আসওয়ালকার পুরো ঘটনা তাঁর ছাত্রকে জানালেও, পরিবারকে জানাতে পারেননি। এখন বেঁচে থাকার লড়াই লড়তে হচ্ছে তাঁকে। সংসার চালাতে তিনি বর্তমানে ১০,০০০ টাকা বেতনের একটি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পালটা গালি দেবে তোমরাও… একেবারে অন্য মেজাজের দ্রাবিড়কে প্রকাশ্যে আনলেন অভিষেক শর্মা
চেম্বুরে অনুশক্তিনগর স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কমিটির যে মাঠ রয়েছে, সেখানে কিউরেটর অর্থাৎ পিচ প্রস্তুতকারক হিসাবে এবং মাঠ পরিচর্যার দায়িত্বে ছিলেন অশোক আসওয়ালকার। ২৪ বছর এই দায়িত্ব পালন করার পরে তাঁকে এই চাকরি থেকে রীতিমতো অপমান করে তাড়ানো হয়েছে। এখানে তিনি মাসিক ৪১,০০০ টাকা বেতন পেতেন। একে চাকরি হারানোর যন্ত্রণা, তার উপর অপমানের জ্বালা সয়ে তিনি বর্তমানে কাজ করছেন চেম্বুরের ইন্দোর টার্ফে। এখানে অনেক কম বেতনেই প্রশিক্ষকের কাজ করতে হচ্ছে তাঁকে। মাত্র ১০,০০০ টাকা বেতনে তিনি কাজ করছেন এখানে। ৬১ বছর বয়সী অশোকবাবুকে রীতিমতো জীবন সংগ্রাম করতে হচ্ছে এই বয়সে। তাঁর একটাই প্রশ্ন, ২৪ বছর যে ক্লাবের জন্য তিনি প্রাণপাত করলেন, সেখান থেকে তাঁর কি এই ব্যবহার প্রাপ্য ছিল?
আরও পড়ুন: তিন-চার ওভারের পর… অক্ষরকে নিয়ে সূর্যের গোপন পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে গেল ক্যামেরায়- ভিডিয়ো
মিড-ডে সংবাদপত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘১৯৮৯-৯০ সালে আমি ভাবা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টারের মাঠে যোগ দিয়েছিলাম। জগন্নাথ ফান্সেকে আমি সহায়তা করতাম মাঠকর্মী এবং কোচ হিসাবে। ৩০০০ টাকা মাসিক বেতনে আমি কাজ শুরু করেছিলাম। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তারা আমাকে যখন বরখাস্ত করে, তখন আমি মাঠকর্মী হিসাবে প্রতি মাসে ২৬ হাজার টাকা এবং কোচ হিসেবে ১৫,০০০ টাকা রোজগার করছিলাম। আমি আমার পরিবারকেও জানাতে পারিনি যে, আমার কাজ চলে গেছে। আমি সূর্যকে মেসেজ করে জানিয়েছি যে, আমার চাকরি চলে গেছে। তাঁকে জানিয়েছি আমার এই ক্ষতির করার পেছনে কে রয়েছে। সূর্য সেই ব্যক্তিকে এখন আর পাত্তা দেয় না। আমি আমার কাজের জায়গাতে আগে থেকেই জানিয়ে আমার ভাইপোর বিয়েতে মালভানে গিয়েছিলাম। আমাকে ওরা জানায়, ফিরে আসার পরে ৩১ ডিসেম্বর দেখা করতে। আমি সেটাই করি। তিন ঘন্টা সেদিন কথা হয়েছিল। একজন বিশেষ ব্যক্তি সেদিন কথা বলেছিলেন। এরপর আমাকে মেসেজ করে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়। আমাকে বলা হয় যে, আমাকে পরে ডাকা হবে। আমাকে রীতিমতো অপমান করা হয়। এক সপ্তাহ পরে আমাকে যখন এসে দেখা করতে বলা হয়, তখন আর কেউ আমার সঙ্গে দেখাই করেনি।’