তদন্তভার হাতে নেওয়ার পরই যে কাজটা সিবিআই গোয়েন্দাদের করা উচিত ছিল, এত দিনে তাঁরা সেটা করলেন! এভাবেই আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ফের একবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা শুরু হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিলেন নির্যাতিতার বাবা।
প্রসঙ্গত, সংবাদমাধ্যমে আজই (সোমবার - ৩ মার্চ, ২০২৫) সামনে আসে, আরজি করে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মোট ১১ জনকে তলব করা হয়েছে। তাঁদের আজ এবং কাল - (৩ ও ৪ মার্চ, ২০২৫), এই দুই দিনের মধ্যে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের অফিসে ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই।
সূত্রের দাবি, সিবিআই এবার যে ১১ জনকে তলব করেছে, তাঁদের মধ্যে কলকাতা পুলিশের এক মহিলা আধিকারিকও রয়েছেন। বস্তুত, এদিন কলকাতার টালা থানার এক মহিলা আধিকারিককে সিবিআই-এর কার্যালয়ে ঢুকতে দেখাও গিয়েছে। তাঁর হাতে বেশ কিছু নথিপত্র ছিল বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এই বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের যেমন নজর কেড়েছে, তেমনই খুব স্বাভাবিকভাবেই নির্যাতিতার পরিবারও এই ঘটনাক্রমের দিকে নজর রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন নিহত তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা।
এই সময় অনলাইন পোর্টালে এই প্রসঙ্গে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে - নির্যাতিতার বাবা মনে করছেন, তাঁরা দিল্লিতে গিয়ে সিবিআই-এর অধিকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেই কিছুটা হলেও ফের তৎপরতা দেখাচ্ছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। না হলে মাঝে দীর্ঘদিনে তদন্তে তেমন কোনও অগ্রগতি দেখা যাচ্ছিল বলেই অভিযোগ করেছেন সন্তান হারানো ওই বৃদ্ধ।
তাঁকে উদ্ধৃত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'দায়িত্বভার নেওয়ার পরই সিবিআই-এর যে কাজটা করার কথা ছিল, আজ ১৯৫ দিন পর তারা সেই কাজ করছে। কার উপর ভরসা রেখে যে বিচারের জন্য লড়াই করব, বুঝতেই পারছি না। তাই কলকাতা থেকে দিল্লি যেতে হয়েছিল। আমরা দিল্লিতে যাওয়ার পর সিবিআই কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে, সেটায় একটা আশার আলো দেখতে পারছি। মাঝে তো কোনও অ্যাক্টিভিটিই ছিল না। ১১ জনকে যে তলব করেছে, তাতে মনে হল, আবার নড়েচড়ে বসেছে। তবে কেন ডেকেছে কী বৃত্তান্ত সেটা ওরাই বলতে পারবে।'
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে ইতিমধ্য়েই প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে নিম্ন আদালত। তাকে আমরণ সশ্রম কারাদণ্ডের সাজাও দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু, নির্যাতিতার পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে সামিল হওয়া জুনিয়র চিকিৎসক - সকলেরই বক্তব্য হল, সঞ্জয় একা মোটেও এই নির্মম ও জঘন্য কাণ্ড ঘটায়নি। এর পিছনে আরও বড় মাথারা রয়েছে এবং তাদের আড়াল করা হচ্ছে।
এই জায়গা থেকেই সিবিআই তদন্তে উপর আস্থা রাখতে চেয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। কিন্তু, সিবিআই-এর তদন্তের গতি ও ধরনে তাঁরা যে খুশি নন, সেকথা ইতিমধ্যেই একাধিকবার জানিয়েছেন তাঁরা। বস্তুত, সিবিআই-এর তদন্ত নিয়ে অভিযোগ জানাতেই কলকাতা থেকে দিল্লি পাড়ি দেন এই দম্পতি। সাক্ষাৎ করেন সিবিআই অধিকার্তার সঙ্গে। আর, তারপরই সংশ্লিষ্ট ১১ জনকে তলব করে সিবিআই।