রাজভবনের দুর্নীতি দমন শাখায় জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে একথা জানিয়ে রাজ্যপাল বলেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলি টাকার বিনিময়ে বেআইনি কাজ করছিল। যতদিন না এরা দুর্নীতি বন্ধে সন্তোষজনক পদক্ষেপ করছে ততদিন এরা অনুমোদন ফেরত পাবে না।
শুক্রবার সংবামাধ্যমকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে কিছু বেসরকারি কলেজে বেআইনি কাজ ও সুবিধার অপব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রতিষ্ঠানগুলির অনুমোদন বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংস্কৃতি ছাত্রদের ভবিষ্যতে কুপ্রভাব ফেলছে। এই জিনিস বরদাস্ত করা হবে না। বিধি মেনে স্বচ্ছতার ব্যাপারে সন্তোষজনক পদক্ষেপ করলে তবেই অনুমোদন ফেরত দেওয়া হবে। যে পদক্ষেপই করা হোক, তা হবে শিক্ষার উন্নতিকল্পে ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মুনাফা আদায়ের উদ্দেশে নিপীড়ন বন্ধ করতে’।
রাজ্যপালের এই পদক্ষেপে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘রাজ্যপাল সম্পূর্ণ এক্তিয়ার বহির্ভূত ও নজিরবিহীন কাজ করছেন। তাঁর মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করার কথা। কিন্তু রাজ্যপাল বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে নিজেকে পদ্মপালে পরিণত করেছেন। তিনি বিজেপির মুখপাত্রের মতো কাজ করছেন ও রাজভবনকে বিজেপির সদর দফতরে পরিণত করেছেন। এভাবে সমান্তরাল প্রশাসন চালিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে প্রতি মুহূর্তে বিব্রত করছেন। বিজেপিকে খুশি করে জগদীপ ধনখড়ের মতো আরও উঁচু পদ পেতে চান তিনি।’
রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘তৃণমূল চায় সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি বহাল থাকুক। কারণ, দুর্নীতির সাথে তৃণমূলের সব নেতা-নেত্রীরা জড়িত। শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলা এক নম্বরে ছিল। তৃণমূল তা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। সর্বস্তরে শুধু ঘুষের রাজনীতি করে। রাজ্যপাল যে পদক্ষেপ করেছেন তা অভূতপূর্ব। এই ধরণের পদক্ষেপ না করলে এখান থেকে দুর্নীতিকে উপড়ে ফেলা যাবে না। রাজ্যপাল শিক্ষিত মানুষের জন্য এই পদক্ষেপ করেছেন। অশিক্ষিতরা টাকার বিনিময়ে ভর্তি হয়ে চাকরি পাবে। এই জিনিস বাংলায় বন্ধ হওয়া দরকার।’