রবীন্দ্রনগরে অশান্তির জেরে বৃহস্পতিবার (১২ জুন, ২০২৫) উত্তপ্ত হল বিধানসভার অধিবেশন। বিজেপি বিধায়কদের প্রতিবাদ, প্রতিরোধের জেরে পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজক হয়ে ওঠে যে একটা সময় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের অধিবেশনে মূলত দু'টি দাবি তুলেছিলেন বিজেপি বিধায়করা। প্রথমত, তাঁরা মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তি নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন।
এরপর রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায় বুধবার (১১ জুন, ২০২৫) যে অশান্তি ছড়িয়েছিল, তা নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা চান বিজেপি বিধায়করা। কিন্তু, তাতেও সায় দেননি বিমান। এর ফলে অধিবেশন চলাকালীনই বিধানসভার ভিতর হট্টগোল শুরু করে দেন বিজেপি বিধায়করা। নিজের আসন ছেড়ে উঠে আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভার কার্যবিবরণী ছিঁড়ে, সেই কাগজের টুকরোগুলি শূন্যে উড়িয়ে দেন তিনি!
তাঁর দলের অন্যান্য বিধায়কও চিৎকার, চেঁচামিচি করতে থাকেন। সেই হট্টগোলের মধ্যেই একের পর এক বক্তব্য রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। একে একে বলতে ওঠেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, অপূর্ব সরকাররা। অন্যদিকে, স্পিকার বারবার বলেন, বিরোধী বিধায়করা এভাবে অশান্তি করে বিধানসভার অধিবেশন পণ্ড করতে পারবেন না! সব মিলিয়ে এক চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার ছবি ধরা পড়ে এদিন বিধানসভার অন্দরে।
এভাবে প্রায় ৫০ মিনিট ধরে অধিবেশন 'চলতে' থাকে। পরিস্থিতি যে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, এটা বুঝতে পেরে একটা সময় স্পিকারের পাশে গিয়ে দাঁড়ান তৃণমূলের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস। তার কিছুক্ষণ পর নিরাপত্তারক্ষীরা স্পিকারকে ঘিরে কার্যত নিরাপত্তাবলয় তৈরি করে দাঁড়িয়ে পড়েন।
পরবর্তীতে বিধানসভার মূল ফটকের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের তুলসী মঞ্চ মাথায় নিয়েও হাঁটতে দেখা যায়। ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী দাবি জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনগর থানার আইসি মুকুল মিঞাকে অপসারিত ও গ্রেফতার করতে হবে। জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল যাতে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন, সেই দাবি সামনে রেখে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভাবছেন বিজেপি বিধায়করা।