বহরমপুরে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে প্রকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। সেই ঘটনায় আগেই অভিযুক্ত প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই মৃত্যুদণ্ড রদ করল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ দোষী সুশান্ত চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড রদ করে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, এই সাজা গণনা করা হবে গ্রেফতার হওয়ার দিন থেকে। পাশাপাশি, তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে আরও ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাকে। (আরও পড়ুন: মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায় জারি ১৬৩ ধারা, সংঘর্ষে গ্রেফতার ১৮)
আরও পড়ুন: ফাঁসির সাজা শুনে দুটো বাক্য বললেন খুনি সুশান্ত, তারপর চুপ! কী বলছেন সুুতপার মা?
২০২২ সালের ২ মে সকালে বহরমপুর শহরের শহিদ সূর্য সেন রোডে হস্টেলের সামনেই সুতপাকে ছুরি দিয়ে একের পর এক আঘাত করে খুন করে প্রেমিক সুশান্ত। অভিযোগ, ৪৫ বার ছুরির কোপ বসানো হয়েছিল সুতপাকে। এরপর সুশান্ত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ পরে মালদহের দ্বারভাঙা মোড় থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তদন্তে উঠে আসে, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে সুতপা ও সুশান্তের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা মালদায় একসঙ্গে টিউশনে পড়ত। পরে সুতপা বহরমপুর গার্লস কলেজে প্রাণিবিদ্যায় ভর্তি হলে দূরত্ব তৈরি হয়। (আরও পড়ুন: রাজকে ঘুঁটি বানিয়ে তৃতীয় কারও সঙ্গে পালানোর ছক ছিল সোনমের? আরও ঘনীভূত রহস্য)
আরও পড়ুন: ইউনুস যেন 'অচ্ছুৎ', 'চরম অপমান' হজম বাংলাদেশি প্রধান উপদেষ্টার
অভিযোগ, সুশান্ত মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার পর তাঁর আচরণ আগ্রাসী হয়ে ওঠে। সম্পর্ক ছিন্ন করার পরও সে সুতপাকে নানা ভাবে বিরক্ত করত। এমনকি, পরিবারের দাবি অনুযায়ী, একাধিকবার খুনের হুমকি দিয়েছিল সুশান্ত। সুতপা মালদা মহিলা থানায় সুশান্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও জানান।তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পরিকল্পিতভাবে খুনের আগে সুশান্ত বহরমপুরে হস্টেলের কাছে একটি বাড়ি ভাড়া নেয় এবং নজর রাখতে থাকে সুতপার উপর। ঘটনার দিন সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ হস্টেল থেকে বেরোতেই রাস্তায় ছুরি নিয়ে সুতপার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সুশান্ত এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক আঘাত করে তাকে হত্যা করে। (আরও পড়ুন: ভারতকে বেস্টফ্রেন্ড বানাতে চাইলেও… বড় দাবি 'সংঘর্ষ বাঁধাতে চাওয়া' ইউনুসের)
আরও পড়ুন: ইউনুসের বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথের কাছারিবাড়িতে হামলা, ঠুটো জগন্নাথ পুলিশ
২০২৩ সালের ২৯ অগস্ট বহরমপুর আদালত সুশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ৩১ অগস্ট বিচারক সন্তোষকুমার পাঠক তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন জানায় সুশান্ত। বুধবার রায় ঘোষণা করে হাই কোর্ট জানায়, দোষীর জন্ম ২০০১ সালের ২ নভেম্বর। অপরাধের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। বর্তমানে তার বয়স ২৪। আদালত মনে করে, এমন অপরাধ ঘৃণ্য হলেও মৃত্যুদণ্ড নয়, দীর্ঘমেয়াদি সাজাই যথাযথ শাস্তি।