বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না চণ্ডীপুরের বাহুবলী তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর। রেস্তোরাঁ মালিককে মারধরের ঘটনায় বারাসত আদালতে আগাম জামিন নিতে এসে বিতর্কে জড়ালেন তিনি। এদিন আদালতে আত্মসমর্পণের পর আগাম জামিনের আবেদন করে সরকারি আইনজীবীদের কক্ষে বসে থাকতে দেখা যায় ফৌজদারি মামলার এই অভিযুক্তকে। কী করে একজন অভিযুক্ত সরকারি আইনজীবীদের কক্ষে বসতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অন্য আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন - মূল সুবিধাভোগীর হয়ে চাকরি বিক্রির টাকা তুলেছে আরেকজন, আদালতে জানাল CBI
পড়তে থাকুন - চিঠির হাতের লেখা কি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকেরই, ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে চায় ইডি
নিউ টাউনের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী আনিসুল আলমকে মারধরের ঘটনায় আগাম জামিন নিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বারাসত জেলা ও দায়রা আদালতে পৌঁছন সোহম। আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। অপেক্ষা করতে থাকেন শুনানির। আদালতের কাজ থেকে আদালত ভবনেই সরকারি আইনজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট কক্ষে ঢুকে যান সোহম। সেখানে প্রায় ২ ঘণ্টা বসে ছিলেন তিনি।
একজন ফৌজদারি মামলার আসামী কী করে সরকারি আইনজীবীদের কক্ষে বসে থাকতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন অন্যান্য আইনজীবীরা। প্রশ্ন তুলতে থাকে বিরোধীরাও। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতে পারে বুঝতে পেরে বেলা ১২টা নাগাদ ওই কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। এর পর গাড়ি করে চলে যান অজ্ঞাত ঠিকানায়। তবে তখনও তাঁর আগাম জামিনের আবেদনে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি আদালত। পরে সোহমের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা যায়, বারাসতেই কোথাও রয়েছেন তিনি। প্রচণ্ড গরমের জন্য বিশ্রাম নিচ্ছেন। আদালতের নির্দেশ প্রকাশ্যে এসে তবেই বারাসত ছাড়বেন তিনি।
এদিন সকালে বারাসত আদালতে পৌঁছে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নেরও জবাব দেননি সোহম। শুধু বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন। এব্যাপারে কিছু বলব না।
গত শুক্রবার নিউ টাউনের একটি রেস্তোরাঁর ছাদে সোহমের প্রযোজনায় একটি শ্যুটিং চলছিল। অভিযোগ, তখন গাড়ি রাখা নিয়ে বিবাদের জেরে রেস্তোরাঁ মালিকের সঙ্গে বিবাদ বাঁধে সোহমের প্রোডাকশন দলের কর্মীদের। তার জেরে ছাদ থেকে নেমে এসে রেস্তোরাঁ মালিককে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এর পর তাঁকে লাথি মারেন সোহম। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সোহমের বীরত্বের ছবি।
আরও পড়ুন - আগ্নেয়াস্ত্র সরাতেই আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায় শাহজাহান, চার্জশিটে দাবি EDর
ওই ঘটনায় টেকনো সিটি থানার পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আক্রান্ত রেস্তোরাঁ মালিক। তাঁর অভিযোগ, ‘পুলিশ সোহমের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না। সোহম বিধায়ক ও শাসকদলের নেতা হওয়ায় পুলিশ তাকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। ঘটনার পর তাঁকে থানায় ডেকে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে চাপ দেওয়া হয়। তাতে রাজি না হওয়ায় তৃণমূলের বাহুবলী বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী পক্ষ থেকে তাদের নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এসেছে। সমস্ত কথা পুলিশকে জানালেও সোহমের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না থানা। তার জেরেই তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ সঙ্গে আদালতের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।