গ্রীষ্মের দাবদাহে নাজেহাল অবস্থা রাজ্যবাসীর। হাঁসফাঁস গরমে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে খুদে পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে সকালে স্কুলের দাবি জানাতে থাকেন অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষকরা। তারইমধ্যে আগামী দু’দিন (শুক্র এবং শনিবার) রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও সরকার পোষিত প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা দফতর। যদিও পার্বত্য এলাকার স্কুলগুলিকে ছা়ড় দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেলে একথা জানিয়েছেন। বিকাশ ভবন থেকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রাথমিক স্কুলগুলির জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭ মে উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট, এখনও কলেজে ভরতির পোর্টাল চালু হল না, কবে শুরু?
তীব্র গরমের কারণে আবার স্কুল ছুটিরও দাবি উঠছে। যদিও শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, গরমকে ভয় না পেয়ে প্রয়োজনীয় সাবধানতা মেনে স্কুল চালু থাকাই বাঞ্ছনীয়। অতিরিক্ত ছুটির ফলে শিক্ষার ক্ষতি হবে বলেই তাঁদের মত। তারমধ্যেই এই ঘোষণা রাজ্য সরকারের। ব্রাত্য বসু এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, গ্রীষ্মের দাবদহের কারণে দুদিন স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গ্রীষ্মের এই সময়টায় দুপুরের দিকে রোদে দৌড়ঝাঁপ, শরীরচর্চা, খেলাধুলোর মতো শারীরিক পরিশ্রমের কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিকাশ ভবন। কারণ, প্রবল গরমে রাস্তায় বা মাঠে বেশি সময় থাকলেই হিট স্ট্রোক কিংবা শরীরে জলের ঘাটতির আশঙ্কা থাকে, যা শিশুর শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। সেই কারণে এই নির্দেশ। মালদা জেলার স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিএমওএইচদের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রত্যেক ব্লকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে জরুরি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখতে হবে। কোনও পড়ুয়া অসুস্থ হলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করবে সেই টিম।
এছাড়া, অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সন্তানদের জল খাওয়ার অভ্যেস বাড়াতে হবে, ওআরএস বা গ্লুকোজ নিয়মিত খাওয়ানো উচিত। এতে শরীরে জলের ঘাটতি ঘটবে না। এর মধ্যেই আবার নতুন করে উঠেছে স্কুলে মর্নিং সেশনের দাবি। কিছু দিন আগে বিভিন্ন জেলা বিদ্যালয় সংসদের তরফে সেই প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তখন তা নাকচ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই প্রস্তাব ফের আলোচনায় এসেছে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল জানান, সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সকালবেলায় ক্লাস চালু করা যায় কি না, সেই নিয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরে সঙ্গে আলোচনা চলছে। শিশুদের স্বাস্থ্যই প্রধান অগ্রাধিকার।
এদিকে, বর্ষায় রাজ্যের কিছু এলাকায় সম্ভাব্য বন্যার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না শিক্ষা দফতর। সেই কারণে বিভিন্ন স্কুল ভবনকে ফ্লাড শেল্টার হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার জন্য আগেভাগেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে এখনই ছুটি ঘোষণা করার পক্ষপাতী নয় শিক্ষা দফতর। পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিকাশ ভবন।