রামনবমীর শেষবেলায় লাইমলাইটে চলে এলেন ব্য়ারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা এ দল-ও দলে দফায় দফায় যাতায়াত করে, আপাতত বিজেপিতে ঠাঁই নেওয়া অর্জুন সিং! কারণ? তাঁর নেতৃত্বাধীন রামনবমীর মিছিলে পতপত করে উড়েছে ইজরায়েলের জাতীয় পতাকা! যা দেখে ব্যোমকে গিয়েছেন অনেকেই। অনেকেই কিছুতেই মেলাতে পারছেন না, রামনবমী বা শ্রীরামের সঙ্গে ইজরায়েলের কী সম্পর্ক! কিন্তু, প্রাক্তন সাংসদের কাছে তারও জবাব মিলেছে!
রবিবার (৬ এপ্রিল, ২০২৫) রামনবমী উপলক্ষে বাংলার নানা প্রান্তে অসংখ্য শোভাযাত্রা ও মিছিল বের করা হয়। সেই সমস্ত মিছিল যেমন গেরুয়া রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে, তেমনই একাধিক মিছিলে অস্ত্র হাতে রাখারও অভিযোগ উঠেছে, আবার এই সমস্ত আয়োজন ঘিরেই দিনভর চোখে পড়েছে সম্প্রীতির ছবিও। কিন্তু, দিনের শেষে একেবারে স্বতন্ত্র কারণে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে অর্জুন সিংয়ের মিছিল। যে মিছিলে তাঁর ছেলে - তথা - ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিংও ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিনের এই শোভাযাত্রা শুরু হয় - ঘোষপাড়া রোডের ভাটপাড়ার আর্য সমাজ মোড় থেকে। আর, তা শেষ হয় স্থানীয় হনুমান মন্দিরের কাছে। এমনিতে অভিযোগ উঠেছে, অর্জুনের নেতৃত্বে চলা এই শোভাযাত্রায় পা মেলানো একাধিক তরুণ, এমনকী কিশোরকেও অস্ত্র হাতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, তার থেকেও বেশি নজর কেড়েছে নীল-সাদা রঙা একটি পতাকা! যা অসংখ্য গেরুয়া পতাকার মাঝেই জ্বলজ্বল করছিল!
খানিকটা ঠাওর করতেই বোঝা যায়, সেটি আসলে ইজরায়েলের জাতীয় পতাকা! বিষয়টি সামনে আসতেই এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম যেমন এই আচরণের প্রতিবাদ করেন। তাঁর মতে, এভাবে আসলে ধর্ম আর রাজনীতিকে একসঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেটা কখনই কাম্য নয়।
কিন্তু, অর্জুন তাঁর মতো করে এর একটা যুৎসই ব্যাখ্য়া দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বক্তব্য হল - যদি মহরমের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা প্যালেস্তাইনের পতাকা বহন করতে পারেন, তাহলে রামনবমীর মিছিলে ইজরায়েলের পতাকা বহন করলে তা নিয়ে আপত্তি কেন করা হবে? কারণ, হাজার হোক ইজরায়েল 'ভারতের বন্ধু'!
তবে, এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক যতই হোক না কেন, অশান্তি কিছু হয়নি। কারণ, পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত সতর্ক ছিল। বিশেষ করে ভাটপাড়া, জগদ্দল থানা এলাকায় যাতে রামনবমী ঘিরে কোনও অশান্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রচুর পরিমাণে বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। রাস্তার মোড়ে মোড়ে, উঁচু ভবনের ছাদ থেকেও নজরদারি চালানো হচ্ছিল। বারবার ড্রোন ক্যামেরায় দেখে নেওয়া হচ্ছিল এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি।