দেশের স্বার্থে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার একজোট হয়ে কাজ করা শুরু করতেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একটা বিরাট অংশেই আজও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব হয়নি। তার নেপথ্যে একাধিক কারণ থাকলেও অন্যতম সমস্যা ছিল জমি।
তথ্য বলছে, এত দিন কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর জন্য জমি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের রাজি না হওয়ার কারণও ছিল বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ ছিল, জমি অধিগ্রহণ করা হলে অনেকের চাষের জায়গা, এমনকী বসত ভিটে পর্যন্ত চলে যেত। অথচ, সরকারের তরফে নামমাত্র ক্ষতিপূরণ মিলছিল। সেই কারণেই জমি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না সীমান্তের বাসিন্দারা।
কিন্তু, বাংলাদেশে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে সীমান্তে কাঁটাতার লাগাতে মরিয়া বিএসএফ। এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার হাতে হাত মিলিয়ে কাজ শুরু করেছে। দুই সরকারের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সীমান্তের জমি মালিকদের ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যেই জমি অধিগ্রহণের টাকা ঢুকতে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের দাবি, জমি দেওয়ার বিনিময়ে সরকারের তরফে বাজারদরের তুলনায় ৬ গুণ বেশি টাকা পাচ্ছেন জমিদাতারা। ফলত, জমি দিতে আর কোনও আপত্তি করছেন না তাঁরা।
কেন্দ্রের কথা মতো নবান্নের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে সীমান্তের চিহ্নিত জমি বিএসএফ-এর হাতে তুলে দিতে হবে। সেই মতো কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এতে জমিদাতা পরিবারগুলি-সহ সীমান্তের বাসিন্দারাও খুশি। তাঁরা বলছেন, কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হয়ে গেলে তাঁরাও নিরাপদে থাকতে পারবেন, দেশও সুরক্ষিত থাকবে। জেলায় জেলায় এই কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে নদিয়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার বিভাগের অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, 'জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু বোঝাপড়া-আপসের ব্যাপার থাকে। বিএসএফ-এর আধিকারিকরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিএসএফ নিজেই রিভিউ করছে। আশা করছি, জমি কেনার বিষয়টা যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব মিটিয়ে ফেলতে পারব।'
অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার অন্তর্গত বাগদার বিডিও প্রসূন কুমার বলেন, 'বয়রা এলাকায় যে ক'টা মৌজা রয়েছে, সেখানে যতটা জমি কেনার কথা, তার বেশিরভাগটাই আমরা কিনে ফেলেছি। কিনে বিএসএফ-কে দেওয়ার কথা, সেটাও দেওয়া হয়ে গিয়েছে।'
স্থানীয় বয়রা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অসিত মণ্ডল বলেন, 'সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতার ছিল না। এখন মানুষ জমিও দিচ্ছে, কাজও হচ্ছে।'