দুধের শিশু থেকে মধ্যবয়সী নারী ও পুরুষ। সংখ্যাটা সব মিলিয়ে ১৬। আদতে সকলেই বাংলাদেশি। অবৈধভাবে ঢুকেছিলেন ভারতে। কেউ গত ১০ বছর ধরে, তো কেউ গত ১৫ বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন শহরে ঘুরে ঘুরে রোজগার করেছেন। কিন্তু, এখন পরিস্থিতি বদলেছে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই সেদেশের মাটিতে ভারত বিরোধিতা চরমে উঠেছে। অন্যদিকে, ভারতের নানা প্রান্তেও বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে পাকড়াও করে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে নিজে থেকেই আত্মসমর্পণ করল ১৬ জন বাংলাদেশির এই দলটি।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের কোতোয়ালি থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন ওই বাংলাদেশিরা। তাঁরা নিজেরাই পুলিশকে জানান, দেশে কাজের অভাব ছিল। তাই চোরা পথে ভারতে ঢুকেছিলেন তাঁরা। তারপর কখনও আর দেশে ফিরে যাওয়ার কথা মনে হয়নি। এভাবেই কেটে গিয়েছে ১০-১৫ বছর! এত দিন ভারতের পুলিশ প্রশাসনও তাঁদের ধরতে পারেনি!
এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা এতগুলো বছর ধরে পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লিতে বিভিন্ন বস্তিতে থেকেছেন। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই ইটভাটার শ্রমিক। অনেকেরই এদেশে ঢোকার পর সন্তান হয়েছে। তাঁরা ভেবেছিলেন, এভাবেই পরিচয় গোপন করে এদেশে সন্তানদের বড় করে তুলবেন। কিন্তু, বর্তমানে পরিস্থিতি যে আর তাঁদের অনুকূলে নেই, সেটা ভালোই ঠাওর করতে পেরেছেন এই অনুপ্রবেশকারীরা। আর পেরেছেন বলেই সটান থানায় হাজির হয়েছেন।
পুলিশকে এই আত্মসমর্পণকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা সকলেই আদতে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা। ভালো থাকার আশাতেই বেআইনিভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু, এখন আর তাঁরা এদেশে থাকতে চান না। পুলিশ বা বিএসএফের হাতে ধরা পড়ার আগেই তাঁরা যাতে স্বদেশে ফিরে যেতে পারেন, সেই জন্যই আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন। কোচবিহার পুলিশের কাছে তাঁদের আর্জি, অবিলম্বে তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হোক।