ভগবান মহাবীরের জন্মদিনকে 'মহাবীর জয়ন্তী' হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটি জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলির একটি। সাধারণত চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের ত্রয়োদশীতে (মার্চ-এপ্রিল মাসে) এই দিনটি উদযাপিত হয়। এবছর মহাবীর জয়ন্তী বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চৈত্র মাসের ২৭ তারিখে পালিত হবে এবং ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ই এপ্রিল, বৃহস্পতিবার পড়ছে এই শুভ দিনটি।
এই দিন জৈন মন্দিরগুলি সাজানো হয়। মহাবীরের জীবন ও শিক্ষার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন শোভাযাত্রা ও ধর্মীয় আলোচনা করা হয়। দুঃস্থদের ভোগদান, পুণ্যকর্ম ও শুদ্ধ জীবনযাপনের প্রতিজ্ঞা নেওয়া হয়।
ভগবান মহাবীর কে ছিলেন?
ভগবান মহাবীর ছিলেন জৈন ধর্মের ২৪তম তীর্থঙ্কর। খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৯ সালে বিহারের বৈশালীর কাছাকাছি কুন্ডলপুরে এক রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর আসল নাম ছিল 'বর্ধমান', যার অর্থ হল ‘যিনি উন্নতি করছেন’। শৈশব থেকেই তিনি শান্ত, সহানুভূতিশীল ও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। জীবনের আরাম-আয়েশ ছেড়ে তিনি ৩০ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করেন এবং আত্মসাধনায় মনোনিবেশ করেন।
আরও পড়ুন - ব্যস্ততার কারণে ক্রমশ কমছে বন্ধুবান্ধব? কীভাবে একাকিত্ব ঘোচাবেন, জেনে নিন
কীভাবে বর্ধমান থেকে হয়ে উঠলেন মহাবীর?
সংসার ত্যাগের পর ১২ বছর কঠোর তপস্যা ও ধ্যানের মাধ্যমে আত্মজ্ঞান অর্জন করেন। এই জ্ঞানলাভের পরে তাঁকে 'কেবলি' বা সর্বোজ্ঞ বলা হয় এবং তিনি ‘জিন’ বা বিজয়ী উপাধি লাভ করেন। সেই থেকেই তাঁর প্রবর্তিত ধর্মের নাম হয় জৈন ধর্ম। তিনি অহিংসা, সত্য, অচৌর্য, ব্রহ্মচর্য এবং অপরিগ্রহ—এই পাঁচটি মৌলিক নীতির প্রচার করেন, যা পরবর্তীতে জৈন ধর্মের মূল স্তম্ভ হয়ে ওঠে। একে বলা হয় পঞ্চশীল। তাঁর অহিংসার দর্শন পরবর্তী যুগে মহাত্মা গান্ধীর মতো ব্যক্তিত্বদেরও প্রভাবিত করেছে।
আরও পড়ুন - কাজের চাপে জেরবার, বুঝতে চাইছে না প্রিয়তম মানুষটি? এভাবে কথা বলে দেখতে পারেন
কলকাতায় উল্লেখযোগ্য বেশ কয়েকটি জৈন মন্দির রয়েছে। এই দিন সেখানে দর্শনে যেতে পারেন।